উদযাপন
পঞ্চাশে সংগ্রহালয়
রিদপুরের মাটির পুতুল থেকে খুলনার সুজনি কাঁথা। যা হারিয়ে যায় তা আগলে বসে পঞ্চাশ পেরোলো গুরুসদয় সংগ্রহালয়।
অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন জেলার ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন গুরুসদয় দত্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলার লোকশিল্পের বহু বিরল নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। স্ত্রী সরোজনলিনী দেবী, সুধাংশু রায়, যামিনী রায়, জসিমুদ্দিনের মতো কিছু মানুষ তাঁকে সাহায্য করেছিলেন।
সেই সংগ্রহের মধ্যে ছিল পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মাটির পুতুল, কাঠের পুতুল, পটচিত্র, নকশিকাঁথা, কাঁসা-পেতল-তামার বাসন, শাড়ি, পুথি, পাটাচিত্র, পাথরের বাসন, সন্দেশ ও আমসত্ত্বের ছাঁচ, বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া প্রত্নবস্তুর নানা নিদর্শন। বাংলার লোকশিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখতেই গুরুসদয় দত্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলার ব্রতচারী সমিতি। ১৯৪১-এ তাঁর মৃত্যুর পরে তার সংগ্রহটি বাংলার ব্রতচারী সমিতির হাতে আসে। গড়ে ওঠে গুরুসদয় সংগ্রহালয়।
দুর্গা, একাদশ শতাব্দী
১৯৬৩-র ৮ ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর সংগ্রহালয়ের উদ্বোধন করেছিলেন। যদিও ১৯৬১-তে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় সংগ্রহালয়ের ভবনটির উদ্বোধন করেছিলেন। ২৩মে ১৯৮৪-তে বাংলার ব্রতচারী সমিতি ও ভারত সরকারের বস্ত্র মন্ত্রকের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে গুরুসদয় দত্ত ফোক আর্ট সোসাইটি এই সংগ্রহালয় পরিচালনার দায়িত্ব পায়।
সংগ্রহালয়ের সম্পাদক বিজনকুমার মণ্ডল বললেন, “সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রয়েছে ছোট-বড় প্রদর্শনী, হস্তশিল্পের মেলা, আলোচনাসভা, বই প্রকাশ ইত্যাদি। এ ছাড়াও লোকশিল্প বিষয়ে ছোটদের আগ্রহী করে তুলতে থাকছে টেরাকোটা ও শোলাশিল্পের কর্মশালা।”
পটচিত্র
সংগ্রহালয়ে রয়েছে বাংলার নকশি কাঁথার সংগ্রহ। রয়েছে সাত প্রকার কাঁথা। যেমন সুজনি কাঁথা, লেপ কাঁথা, বেতন কাঁথা, ওয়াড় কাঁথা, আরশিলতা কাঁথা, দুর্জনী কাঁথা ও রুমাল কাঁথা। সম্পাদক জানালেন, ৫০টি কাঁথা গ্যালারিতে থাকলেও রিজার্ভ সংগ্রহে আরও ১৫০টির মতো কাঁথা রয়েছে। লোকশিল্প ছাড়াও প্রত্নসামগ্রীর ভিন্ন একটি গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া হিন্দু ও বৌদ্ধ স্থাপত্যের নানা নিদর্শন।
গুরুসদয় দত্তের সংগ্রহের পাশাপাশি এখানে স্থান পেয়েছে তাঁর পুত্রবধূ আরতি দত্তের দেশ-বিদেশের পুতুলের সংগ্রহ। এ ছাড়াও পরবর্তী কালে প্রতাপচন্দ্র চন্দ্র ৮০টি চিনা শিল্পকলা ও প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত তাঁর ডোকরার সংগ্রহ দান করেছিলেন এই সংগ্রহালয়ে।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.