দু’টো টেস্ট যেতে না যেতেই অশান্তি বেধে গেল মাইকেল ক্লার্কের সংসারে।
চেন্নাইয়ের পর হায়দরাবাদ। পরপর দু’টেস্টেই বিশ্রী ভাবে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে মোহালিতে শুরু হচ্ছে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। কিন্তু তার আগে ধুন্ধুমার লেগে গেল অস্ট্রেলীয় কোচ মিকি আর্থার এবং টিমের অফ স্পিনার নাথন লিয়ঁ -র মধ্যে।
হায়দরাবাদে লিঁয়কে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটেই অনুতপ্ত নন আর্থার। বরং অস্ট্রেলীয় কোচের সাফ যুক্তি, চেন্নাইয়ে ধোনির হাতে বেদম মার খাওয়ার পর লিয়ঁ -র আত্মবিশ্বাস বলে আর কিছু ছিল না। তাই বাদ হায়দরাবাদে। যে তত্ত্ব পত্রপাঠ উড়িয়ে দিচ্ছেন লিয়ঁ। পরিষ্কার জানিয়েছেন, কোচের যুক্তির মোটেই ঠিক নয়। |
“আমি যে ঠিকঠাক বোলিংই করেছি, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ সচিন তেন্ডুলকরের উইকেট। আত্মবিশ্বাস কেন কমতে যাবে? বরং বেড়েছে। এই নিয়ে সচিনকে টেস্টে দ্বিতীয় বার আউট করলাম। তাতে কখনও আত্মবিশ্বাস কমে?” প্রশ্ন তুলেছেন অস্ট্রেলীয় অফস্পিনার। যাঁকে উপ্পলে বাদ দেওয়া ‘মূর্খামি’ হয়েছে বলে মনে করছে অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যম। এবং এখানেই কোচের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার বন্ধ করেননি লিয়।ঁ আরও বলেছেন, “ভারতের পিচে এসে ওদের ব্যাটসম্যানদের আউট করা যে কত কঠিন, সবাই জানে। স্পিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ওস্তাদ। চেন্নাইয়ের উইকেটটাও মোটেই সহজ ছিল না। তাই প্রথম টেস্টের পর আমি বেশ খুশিই ছিলাম। স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল আর শেন ওয়ার্নের কাছ থেকে কিছু পরামর্শও নিই। হায়দরাবাদে দ্বিতীয় টেস্টের কথা ভেবেই। কিন্তু ওখানে খেলার সুযোগই পেলাম না।”
২০১১ -এ অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে লিয়ঁকে এতটা মুখর হতে শোনা যায়নি, বলছে অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যম। পঁচিশ বছর বয়সি স্পিনারকে সবাই বেশ চাপা স্বভাবের বলেই জানে। তাই লিয়ঁ এত গরম গরম কথা বলায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্ট্রেলিয়া শিবিরের আবহাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক অবশ্য বলছেন, সব ঠিকই আছে। তবে স্বীকার করে নিলেন, দল হিসেবে তাঁদের উন্নতি করতে হবে। দিল্লিতে এ দিন এক বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সহজেই হাল ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের ধাতে নেই। তাই এই সিরিজেও আমরা লড়াইয়ে ফিরব না, এমন কথা ভাববেন না। তবে আরও ভাল দল হয়ে উঠতে হবে আমাদের। পরের টেস্টটা এক বার জিততে পারলে শেষটাও পারব। এখন এটাই লক্ষ্য।” নিজেদের দল নিয়ে এতটাই দুশ্চিন্তায় ডুবে ক্লার্ক যে ভারতীয় দল থেকে বীরেন্দ্র সহবাগের বাদ পড়া নিয়েও তাঁর কোনও হেলদোল নেই। ক্লার্কের মতে, “সত্যি বলতে, ভারতীয় দল নিয়ে এখন ভাবার সময় নেই আমার। নিজেদের নিয়েই ভাবছি। দুটো টেস্টে আমাদের কী কী ভুল হয়েছে, সেগুলো বুঝতে পেরেছি। পরের দু’টো টেস্টে মাঠে নেমে আশা করি শুধরে নিতে পারব।” তবে কাজটা সহজ হবে না, জানেন ক্লার্ক। “ভারতের পরিবেশ, উইকেট, মাঠ সব কিছুই আমাদের চেয়ে আলাদা। আর আমাদের দলটা এমন কিছু অভিজ্ঞও নয়। এই দলের মাত্র চার জন এর আগে এ দেশে খেলে গিয়েছে। তবু আমাদের ফিরতেই হবে।”
দলের উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েড আবার বলেছেন, “যদিও আমরা এখন বেশ চাপে রয়েছি, তবে মোহালিতে আমরা চাপটা উলটে ওদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করব।” আর প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ডিন জোন্সের মনে হচ্ছে, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া দু’টো টিমই নিজের দেশে সেরা। শক্তিপরীক্ষা হোক নিরপেক্ষ কেন্দ্রে। “দু’টো টিমই নিজের দেশে ভয়ঙ্কর। নিরপেক্ষ কেন্দ্রে ম্যাচ দিয়ে দেখা হোক না। বোঝা যাবে কার সত্যিই কতটা ক্ষমতা।” |