|
|
|
|
নারী দিবসে প্রেমা জয়কুমারকে সংবর্ধনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
দেশের মধ্যে কোন রাজ্যের মানুষ কত ভাল আছেন, আর কোথায় নারীরা কতটা নিরাপদ—সেই সমীক্ষার ফলাফল সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রেমা জয়কুমার মহারাষ্ট্র থেকে এসেছেন। সেখানে মেয়েদের নিরাপত্তার সূচক নীচের দিকে। অথচ ভাল থাকার মানদণ্ডে সেই রাজ্য অনেক উপরে। আর যে রাজ্য তাঁকে নারী দিবসে সম্বর্ধনা দিল, সেই অসম নারী নিরপত্তায় উপর দিকে হলেও ভাল থাকার মানদণ্ডে এক্কেবারে তলানিতে। তবে কী ভাল থাকা আর মেয়েদের ভাল রাখার মধ্যে সম্পর্কটা ব্যস্তানুপাতিক? প্রেমা মনে করেন, হয়তো তাই। তাঁর কথায়, “এই ভারসাম্যটা যেদিন সমান হবে, সে দিন বুঝব আমি ও আমার মতো মেয়েদের দাঁতে দাঁত চাপা লড়াইটা সফল হয়েছে।” ২৪ বছরের মেয়েটি সর্বভারতীয় চার্টার্ড অ্যাকউন্টেন্সি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। মালাডের ৩০০ বর্গ ফুট ঘরের দারিদ্র থেকে নিজের পরিবারকে আলোকবৃত্তে টেনে তোলা প্রেমার কথায়, আত্মবিশ্বাস আর অধ্যাবসায়ই একদিন নারীদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করবে।
নারী দিবসে আজ অসম সরকার প্রেমা জয়কুমারকে সম্বর্ধিত করল। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এরপর থেকে প্রেমার লেখাপড়ার সমস্ত খরচ বহন করবে অসম সরকার।
আদতে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা জয়কুমার পরিবার এখনও সাফল্যের সঙ্গে ধাতস্থ হননি। কয়েকদিন আগেও মুম্বইয়ের অটো চালক জয়কুমার পেরুমল ও তাঁর স্ত্রী লিঙ্গাম্মাকে কেউ চিনতেন না। কিন্তু চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেও তাঁরা ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হতে দেননি। প্রেমা বলছিলেন, “আমার পড়া নষ্ট হবে বলে মা বাড়ির কোনও কাজ আমায় করতে দিত না। সাফল্যের পরে, প্রথম নারী দিবসের দিনটা তাই মাকেই উৎসর্গ করতে চাই।” গোটা দেশের মধ্যে যে পরীক্ষায় পাশের হার মাত্র ১৫ শতাংশ—সেখানে প্রেমা আর তাঁর ভাই, ২২ বছরের ধনরাজ প্রথম বার পরীক্ষায় বসেই সফল হন।
মা ও ভাইকে নিয়েই গুয়াহাটি জাতীয় গ্রন্থাগারের মঞ্চে আসেন প্রেমা। জাপি, গামোছা, উত্তরীয় আর মানপত্রে সম্মান লাজুক মেয়েটাকে আরও লজ্জায় ফেলে দেয়। তিনি জানান, পরীক্ষায় ভারতসেরা হওয়ার পরে বহু তাবড় সংস্থার কর্তাদের অভিনন্দন পেয়েছেন। কিন্তু এখনও ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া হয়নি। তবে প্রথম বার অসমে এসে খুব খুশি প্রেমা, ধনরাজ, লিঙ্গাম্মা। প্রেমা বলেন, “বাবা-মাকে ধন্যবাদ। ভাই ও আমাকে একই ভাবে মানুষ করেছেন। মেয়ে বলে উপেক্ষা করেননি।” |
|
|
|
|
|