|
|
|
|
রাজীব দাস-হত্যা |
দু’মিনিটে খুন, বিচার কি দু’বছরেও পাব না |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
“আমার ভাইকে খুন করার সময়ে ওরা তো দু’মিনিটও ভাবেনি। দু’বছর পেরিয়ে গেল, সেই অপরাধীদের সাজা দিতে তা হলে এত ভাবনা-চিন্তা কেন?”
শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে বারাসতে রাজীব দাস হত্যাকাণ্ডের ‘প্রলম্বিত’ বিচার প্রসঙ্গে কাঁদতে কাঁদতে এমনই প্রশ্ন তুললেন নিহতের দিদি, রিঙ্কু দাস। সঙ্গে সঙ্গে চিত্কার করে ‘‘ঠিকই তো, একদম ঠিক’’ বলে সে প্রশ্নের সমর্থন করেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। অভিনেত্রীর চোখেও তখন চিকচিক করছে জল।
রাজীব হত্যাকাণ্ডের মামলায় দেরি নিয়ে আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন বারাসত আদালতের বিচারক স্বয়ং। ২০১১-র ১৪ ফেব্রুয়ারি বারাসতে দিদি রিঙ্কুর সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে খুন হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে চার্জশিট জমা দেয় সিআইডি। ওই ঘটনায় বারাসত কোর্টের কোনও আইনজীবী অভিযুক্তদের পক্ষে দাঁড়াননি।
কেন দেরি হচ্ছে রাজীব হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া? |
তাঁর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে খুন হওয়া ভাইয়ের কথা বলতে ভেঙে
পড়লেন রিঙ্কু দাস। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র |
আদালত সূত্রের খবর, আসামি পক্ষের হয়ে কোনও আইনজীবীই মামলা লড়তে না চাওয়ায় তিন মাসে তিন-তিন বার রাজীব হত্যা মামলার চার্জ গঠনের দিন পিছিয়ে যায়। আদালতে ধৃতেরা জানায়, আইনজীবী নিয়োগের ক্ষমতা তাদের নেই। এর পরে আসামির হয়ে সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারক। পরে অবশ্য অভিযুক্তেরা নিজেরাই আইনজীবী নিয়োগ করে। এর পরে ওই মামলার চার্জ গঠন হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ৪৩ জনের মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়। ওই মামলায় সরকার পক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি শান্তময় বসু এ দিন বলেন, “এখন বিচারক নেই। তাই বিচার প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে।”
এ দিন প্রেস ক্লাবে একটি সিডি প্রকাশের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রিঙ্কু। সেখানে ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচারে দেরির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, “ওই ঘটনার পরে কলকাতা, বারাসতে পরপর আরও ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীরা যদি এর মধ্যে সাজা পেত, তা হলে সেই অপরাধ আবার করতে গিয়ে দুষ্কৃতীরা ভয় পেত।” রিঙ্কু আরও বলেন, “বরং মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য একটি করে অস্ত্র তুলে দিক সরকার। তা হলে সশস্ত্র অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমরা একাই লড়তে পারব।”
ঋতুপর্ণা বলেন, “রিঙ্কুর চোখের জল থামছে না। প্রতিবাদের বদলে বরং লজ্জা করছে। আজও নারী দিবসে আমরা সম্মান ভিক্ষা করছি। কোথায় যেন সব কিছু ভুল হয়ে যাচ্ছে।”
|
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১-র আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতা। |
|
|
|
|
|