পাইপ ফাটিয়ে হাঁ হয়ে গেল জমি
ফের পায়ের নীচের মাটি আচমকা ধসে গেল বারাবনিতে।
শুক্রবার ভোরে বারাবনি ব্লকের রসুনপুর লাগোয়া এলাকার একটি রাস্তায় ধস নামে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তার পাশের জল সরবরাহের পাইপ ও বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে সকাল থেকে জল না পেয়ে রয়েছেন এলাকার অন্তত এক ডজন গ্রামের প্রায় পনেরো হাজার মানুষ। বিদ্যুৎ পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়েছে এলাকায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা ও পুলিশ। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, ভোর চারটে নাগাদ তাঁরা মাটি ফাটার শব্দ শুনতে পান। দিনের আলো ফুটতেই ঘরের বাইরে এসে দেখেন কাপিষ্টা থেকে আমুলিয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটির বেশ কিছুটা অংশ বসে গিয়েছে। সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২০০ ফুট ব্যস এলাকায় ফাটল ধরেছে। রাস্তা বসে গিয়ে প্রায় সাত ফুট গভীর গর্তও হয়েছে। ওই রাস্তার পাশ দিয়েই গিয়েছে খরাবর জলপ্রকল্পের একটি পাইপ, ধসে সেটিও দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে পড়েছে। হেলে পড়েছে রাস্তার পাশে একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে রয়েছে আশপাশের গ্রাম।

ধরণী দ্বিধা হও। ভেঙেছে জলের পাইপ। রাস্তা জুড়ে নেমেছে গভীর ফাটল।

জল সরবরাহের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রসুনপুর সংলগ্ন গ্রামগুলির প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা সমস্যায়। এছাড়া ধস নামা অংশ থেকে ক্রমাগত বেরোচ্ছে ধোঁয়া। ঝাঁঝালো কটূ গন্ধে ছেয়ে গিয়েছে গোটা অঞ্চল। গ্রামবাসীরা আতঙ্কে, আবারও হয়তো ধস নামতে পারে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারবানি থানার পুলিশ। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় না। ঘণ্টাখানেক পরে এলাকা পরিদর্শনে আসেন বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাস। বিডিও-কে নাগালে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। জল সরবরাহের পাইপ মেরামত না হওয়া পর্যন্ত গ্রামগুলিতে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। কী কারণে এই ধস তা জানতে চাওয়া হলে বিডিও বলেন, “এক সময়ে এই এলাকায় অবৈধ খাদান চলেছে রমরমিয়ে। তার জেরে এই রাস্তাটির তলার জমি ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সেই কারণেই ধস নেমেছে বলে মনে হচ্ছে।”
ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন বারাবনি ব্লকের জামগ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দয়াময় চক্রবর্তীও। তাঁর অভিযোগ, এলাকায় মাঝেমাঝেই ধস নামছে। রাস্তা বসে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। ধসে জল সরবরাহের পাইপ ভেঙে যাওয়ায় পানীয় জলও মিলছে না।
বিপদবার্তা ঝুলিয়ে রাস্তা আটকেছে পুলিশ।
ব্লক প্রশাসনকে অনেকবার এ বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে জানান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ ধরনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মুশকিলে পড়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তাঁদের স্কুলে যাওয়া হয় না।
শুক্রবার সকালেও দেখা যায়, আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বিপদে পড়ে যায়। তারা বলে, ঘুরপথে স্কুলে যাওয়া যায়। কিন্তু সেই রাস্তা অত্যন্ত দুর্গম ও অনেকবেশি পথ হাঁটতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের এই সমস্যার কথা জানতে পেরে বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাস ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেন। রাস্তা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত এই গাড়িতেই ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াত করবে বলে জানান তিনি। এর সঙ্গেই জল সরবরাহের পাইপ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আশপাশের গ্রামগুলিতে জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে ও খারাপ হয়ে যাওয়া গভীর নলকূপগুলি মেরামত করে চালু করার নির্দেশ দেন বিডিও।

শুক্রবার বারাবনির রসুনপুরে ছবিগুলি তুলেছেন শৈলেন সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.