ছোটবেলায় সে যখন খুব কান্নাকাটি করতো, বাবা-মা বলতেন নামতা বলো। আর তাতেই শান্ত হয়ে যেত ছোট্ট ছেলেটা।
তখনই টের পেয়েছিলেন বাঙালি দম্পতি, ছেলেটি তাঁদের ‘জিনিয়াস’। কিন্তু তা বলে আইনস্টাইনের থেকেও বুদ্ধি বেশি! স্টিফেন হকিংও আইকিউ-এ তার থেকে পিছিয়ে! বিশ্বাস করতে পারছেন না ওঁরা। ভাবতে পারছে না অগ্নিজ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। ব্রিটিশ মেনসা আইকিউ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে সে।
মেনসা ব্রিটেনের জনপ্রিয় আইকিউ পরীক্ষা। নিজের বুদ্ধি যাচাই করতে চাইলেই, কেউ অংশ নিতে পারে। আইকিউ পুরো কথা ‘ইনটেলিজেন্স কোয়েশিয়েন্ট’। এই পরীক্ষায় যাচাই করে দেখা হয় স্মৃতিশক্তি, সাধারণ জ্ঞান, যুক্তিবুদ্ধি এবং বোঝার ক্ষমতা। দেখা হয়, কত তাড়াতাড়ি জটিল অঙ্ক সমাধান করতে পারে প্রতিযোগী, কত দ্রুত জবাব দিতে পারে। ৯৫% মানুষই আইকিউ পরীক্ষায় ৭০ থেকে ১৩০ স্কোর করে। অগ্নিজ পেয়েছে ১৬২।
|
অগ্নিজ বন্দ্যোপাধ্যায় |
কলকাতাতেই জন্ম অগ্নিজর। ২০০২ সালে, তার যখন বছর দেড়েক বয়স, তখনই বাবা-মার সঙ্গে ব্রিটেনে চলে আসে সে। বাবা শুভায়ু বন্দ্যোপাধ্যায় পেশায় চিকিৎসক। মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করে এখন বিলেতে প্র্যাকটিস করছেন। মা প্রণীতা এমবিএ। ছেলের কথায় শুভায়ু বললেন, “ওর যখন দু’বছর বয়স, মন খারাপ থাকলেই ওকে অঙ্ক করতে দিতাম। ওকে শান্ত করার ওটাই ছিল সহজ উপায়।”
শুধু অঙ্কই নয়, রসায়ন এবং পদার্থবিদ্যাতেও বারো বছরের অগ্নিজর অগাধ জ্ঞান। আট বছর বয়সেই সে গড়গড় করে বলতে পারত পর্যায় সারণী (পিরিওডিক টেবল)। সেই সঙ্গে প্রতিটি কণার চরিত্র, পারমাণবিক সংখ্যা, তারা কোন গ্রুপে রয়েছে, সবই।
স্কটিশ ম্যাথেমেটিক্যাল চ্যালেঞ্জ-এ পর পর তিন বছর সেরার সম্মান পেয়েছিল অগ্নিজ। এর মধ্যে প্রথম বার দু’বারই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ন্যূনতম যে বয়স দরকার, অগ্নিজ-র তা ছিল না। যোগ্যতা প্রমাণ করতে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল তাকে। ২০১২ সালে স্ট্যান্ডার্ড গ্রেড পাশ করেছে অগ্নিজ।
এই পরীক্ষাটা অনেকটা ভারতের দশম শ্রেণির পর্ষদের পরীক্ষার সমসাময়িক। যে বয়সে স্ট্যান্ডার্ড গ্রেড পাশ করার কথা, অগ্নিজ তার চার বছর আগেই পাশ করে ফেলেছে। এখন ব্রিটেনের ‘ম্যাথেমেটিক্যাল টেস্ট’-এর সেরা দলে রয়েছে সে। তৈরি হচ্ছে এ বছরের ব্রিটেন ম্যাথ অলিম্পিয়াডের জন্য।
খেলাধুলোর মধ্যেও মাথা খাটাতে হলেই ভাল লাগে অগ্নিজর। দাবা তাই খুব পছন্দ। আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই রয়েছে ভিডিও গেমের ঝোঁকও। তবে খেলার থেকেও খেলা বানাতেই বেশি ভাল লাগে তার। হ্যাঁ, ইতিমধ্যেই দারুণ দারুণ ভিডিও গেমস বানিয়ে ফেলেছে অগ্নিজ। রয়েছে তার নিজস্ব ওয়েবসাইটও।
ছেলের এই অসাধারণ মেধার পিছনে রহস্যটা কী? শুভায়ুর জবাব, “ও নিজে নিজেই শিখেছে। আমরা শুধু উৎসাহ দিয়ে গিয়েছি।”
তবে সংখ্যার প্রতি গভীর টানটা তাকে নন্টে-ফন্টে থেকে দূরে সরিয়ে রাখেনি। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দুই বিচ্ছুকে অগ্নিজর খুব পছন্দ। আর পছন্দ চন্দ্রবিন্দুর গান।
|
ঈশ্বর কণা
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
হিগস-বোসন কণাই যে ঈশ্বরকণা, তার সপক্ষে আরও কিছু প্রমাণ পেলেন সার্নের বিজ্ঞানীরা। যদিও এখনও পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার সময় আসেনি। তবে লার্জ হেড্রন কোলাইডারে বিগত কয়েক বছর ধরে ‘সার্ন’ যে গবেষণা-যজ্ঞ চালাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত তার গতিপ্রকৃতি তেমনই ইঙ্গিত করছে। বৃহস্পতিবার সার্নের বিজ্ঞানীরা জানান, যে হিগস-বোসন কণা পদার্থে ভরের জোগান দেওয়ার কাজটি করে বলে ভাবা হয়েছিল, তেমনই একটি কণা পাওয়া যাচ্ছে। |