রাস্তা ঘেঁষে ঝা চকচকে দোতলা ভবন। ভিতরটাও ঝকঝকে তকতকে। কোথাও নোংরা-আবর্জনার লেশ মাত্র নেই। এটাই চিত্র খড়গ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালের। কিন্তু এ হেন দর্শনধারী হাসপাতালে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবাও মেলে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীদের। আশপাশের ১১টি অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল এই হাসপাতাল। কিন্তু উপযুক্ত পরিষেবা পান না এলাকাবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, ৬০ শয্যার এই হাসপাতালের কাজ হল কেবলই বহরমপুরের বড় হাসপাতালে রেফার করা। এমনিতেই রয়েছে চিকিৎসকদের অপ্রতুলতা। যে কয়েক জন ডাক্তার রয়েছেন তাঁরা আবার হাসপাতালে রোগী দেখার পরিবর্তে ‘প্রাইভেট প্রাক্টিসে’-ই বেশী উৎসাহী। অভিযোগ, বর্হিবিভাগে রোগীদের ঠাই দাঁড় করিয়ে রেখে খোশ গল্পে মেতে ওঠেন চিকিৎসকেরা। কিছু বললেই উল্টে মুখঝামটা দেন রোগীদের। এলাকার বাসিন্দা নির্মল রায় বা ইমরান আলিরা বলেন, “বাইরে থেকে দর্শনধারী মনে হলেও আসলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসার মান একেবারে তলানিতে। কিছু বলতে গেলেই জোটে চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহার। সামান্য অসুখেই রেফার করে দেওয়া হয় রোগীদের।” যদিও এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন খড়গ্রামের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আমিনা মরিয়াম। তিনি বলেন, “অনেক সময় রোগীর আত্মীয়রাই শহরের হাসপাতালে যাওয়ার ব্যাপারে তৎপরতা দেখান। তখন বাধ্য হয়ে আমাদেরও রেফার করতে হয়।” তবে বিএমওএইচ বলেন, “রাজ্যের আর পাঁচটা হাসপাতালের মত এখানেও কর্মী সংখ্যা কম। তাই অনেক সময় আশানুরুপ পরিষেবা দেওয়া যায় না।” নিয়মানুযায়ী ওই হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ১৬ জন। কিন্তু বিএমওএইচকে ধরে সাকুল্যে রয়েছেন ৪ জন ডাক্তার। যদিও খাতায় কলমে আরও ৪ জন ডাক্তার রয়েছেন। কিন্তু তাঁরা ডেপুটেশনে অন্যত্র কাজ করেন। নার্স থাকার কথা ৪২ জন। কিন্তু রয়েছেন মাত্র ১৪ জন। তার মধ্যে ৫ জন আবার এই মুহূর্তে দায়িত্বে নেয়। তাই মাত্র ৯ জন নার্সই সম্বল। সাফাইকর্মী থাকার কথা ১৩ জন। রয়েছেন ১০ জন। শূন্যপদ ৩টি। হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট রয়েছেন মাত্র ১ জন।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের আবুল কাসেম বলেন, “ওই হাসপাতালে রোগীরা পর্যাপ্ত পরিষেবা পান না। তবে সব দোষ চিকিৎসকদের নয়। কয়েকজন ডাক্তারের পক্ষে এত রোগীর চাপ নেওয়া অসম্ভব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার কয়েক দাবি জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” |