রক্ত পরীক্ষার ‘কিট’ নেই, সঙ্কট
ক্তের জোগান রয়েছে। কিন্তু মজুত রক্ত পরীক্ষার জন্য মিলছে না সরঞ্জাম বা ‘কিট’। ফলে, চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের রক্ত দিতে পারছে না কালনা মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক।
সারা বছরই গোটা মহকুমার রক্তের চাহিদা মেটায় এই ব্লাড ব্যাঙ্ক। বিভিন্ন শিবির থেকে সংগ্রহ করে রক্তের জোগান দেয় তারা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মাসে ১৫টি শিবির রয়েছে। যার মধ্যে দু’টি ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। তা থেকে সংগৃহীত হয়েছে ১২০ ব্যাগ রক্ত। বৃহস্পতিবার কুবাজপুর গ্রামের একটি শিবির থেকে আরও ৪০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করার কথা। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে আরও ১২টি শিবির হবে। তা থেকে আরও প্রায় পাঁচশো ব্যাগ রক্ত আসবে বলে আশা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, রক্তদাতার অভাব নেই। কিন্তু সংরক্ষণের অভাবেই শিবিরগুলিতে রক্ত দিতে ইচ্ছুক সবার কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা যাবে না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যাম্প থেকে রক্ত সংগ্রহের পরে তা হেপাটাইটিস, এইচআইভি-সহ নানা রকম ৬টি পরীক্ষা করা হয়। তার পরে রক্তের ব্যাগ তুলে দেওয়া হয় রোগীর বাড়ির লোকজনের হাতে। এই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট ফুরিয়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট ফুরিয়ে যাওয়ার জন্য সপ্তাহখানেক আগে থেকে সমস্যা দেখা দেয়। জরুরি প্রয়োজন ছাড়আ রক্ত সরবরাহ বন্ধ রেখেছে ব্লাড ব্যাঙ্ক। এর ফলে শুধু মহকুমা হাসপাতালের রোগীরা নন, বিপাকে পড়ছেন কালনা শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা রোগীরাও। রক্ত না মেলায় অনেক রোগীর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের দিন পিছিয়ে দিচ্ছে নার্সিংহোমগুলি। ফলে, রোগীদের সমস্যা বাড়ছে।

সমস্যায় ব্লাড ব্যাঙ্ক। —নিজস্ব চিত্র।
ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোনও রোগীর জন্য রক্ত চাওয়া হলে প্রথমে দেখা হচ্ছে, সেই রোগীর ক্ষেত্রে তা কতটা বেশি জরুরি। তা জানতে কথা বলা হচ্ছে রোগীর চিকিৎসকের সঙ্গে। খুব প্রয়োজন থাকলে তবেই দেওয়া হচ্ছে রক্ত। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, “হাসপাতালের সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিস (এসটিডি) বিভাগ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ১৪৮টি কিট ধার নেওয়া হয়েছে। সেই কিটের মাধ্যমে রক্তের পরীক্ষা করে জরুরি ভিত্তিতে তা দেওয়া হচ্ছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের কিট চলে এলে তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।”
এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত পড়েছে নার্সিংহোমগুলির। কালনা শহরের বাসিন্দা রমেশ সরকার বলেন, “পেটে টিউমার অস্ত্রোপচারের জন্য আমার এক আত্মীয়কে দু’দিন আগে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত না মেলায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দিচ্ছেন।” কালনা নতুন বাসস্ট্যান্ডের কাছে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় অস্ত্রোপচারের সুযোগ থাকা এক নার্সিংহোমের মালিক নাসিরুদ্দিন শেখের কথায়, “সময়ে রক্ত না মেলায় আমাদের বহু অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দিতে হয়েছে চলতি সপ্তাহে। তাতে রোগীদের হয়রানিও বাড়ছে। কবে সমস্যা মিটবে জানি না।”
রক্ত পরীক্ষার কিটের সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের সুপার অভিরূপ মণ্ডল। তিনি বলেন, “বর্ধমান থেকেও কিট মিলছে না। তবে বর্ধমানে রক্ত পরীক্ষার জন্য রয়েছে একটি বিশেষ যন্ত্র। প্রায় ২০০ ব্যাগ রক্ত ওই যন্ত্রে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তাই মহকুমা হাসপাতাল পর্যাপ্ত রক্ত পাবে। অন্য জায়গায় চাহিদা মিটবে শুক্রবার সকাল থেকে।” সুপারের দাবি, মহকুমা হাসপাতালে মাঝে-মধ্যেই রক্তের কিটের সমস্যা দেখা দেয়। তাই রক্ত পরীক্ষার বিশেষ যন্ত্রটি যাতে এই হাসপাতালকেও একটি দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.