|
|
|
|
কলেজে সেমিনার এসপি-র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
আইএএস-আইপিএস পরীক্ষায় বসতে পরামর্শ চাইলে অফিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা করুন। জেলা পুলিশ সুপারের মুখে এই পরামর্শ শুনে উৎসাহিত ছাত্রছাত্রীরা। জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের এক ছাত্র বলেই ফেললেন, ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে কয়েকবার থানায় যেতে হয়েছে। পুলিশের নাম শুনলেই বুক দুরুদুরু শুরু হয়। আর এসপির নাম শুনলে কথাই নেই। কিন্তু এসপি নিজে কলেজে এসে যেভাবে আমাদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে পেশাদারি পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শের জন্য অফিসে যেতে বললেন, তাতে অনুপ্রাণিত মনে হচ্ছে।
মঙ্গলবার এবং বুধবার, দুদিন জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র, কর্মাস কলেজ এবং প্রসন্নদেব মহিলা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাদাভাবে সময় কাটালেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। সর্বভারতীয় চাকরির পরীক্ষা থেকে বেসরকারি সংস্থার মৌখিক পরীক্ষার জন্য কী ধরণের প্রস্তুতি প্রয়োজন, ব্যাখ্যা করলেন পুলিশ সুপার। ই মেল বা সামাজিক বন্ধুত্বের সাইট ফেসবুকে হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচতে পাসওয়ার্ডকে কী ভাবে শক্তিশালী করা যায়, তার নানান কৌশলও চক দিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে বুঝিয়ে দিলেন।
গতকাল কমার্স কলজের পর এ দিন প্রসন্নদেব মহিলা কলেজে সেমিনার করেছেন পুলিশ সুপার। সাইবার অপরাধের হাত থেকে বাঁচার উপায়, সর্বভারতীয় পরীক্ষার পরামর্শ এবং নারী পাচার নিয়ে সচেতনতা এই তিন বিষয়ের গত মাস থেকে জেলার বিভিন্ন কলেজে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সেমিনার শুরু করেছে জেলা পুলিশ। ভিডিও স্ক্রিনে তথ্যচিত্র দেখানোর পরে পড়ুয়াদের কাউন্সিলিং করছেন পুলিশ সুপার। এ দিন তিনি ছাত্রীদের বলেন, ছাত্রাবস্থায় আমারও আইএএস বা আইপিএস পরীক্ষা নিয়ে ধারণা ছিল না। আমি পড়াশোনা করে সব জেনেছি। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের মধ্যেও যোগ্যতা রয়েছে।
পুলিশ সুপারের মুখে, এক যুবককে ভালবেসে বাড়ি থেকে পালিয়ে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে শিলিগুড়ির একটি মেয়ের দিল্লির নিষিদ্ধপল্লিতে পৌঁছে যাওয়ার বিবরণ শুনে ছাত্রীদের মুখ কখনো ফ্যাকাশে হয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। কখনও বা মৌখিক পরীক্ষায় অপদস্থ হওয়ার মজার গল্প শুনে হাসির রোল উঠেছে। মঙ্গলবার আনন্দচন্দ্র কলেজের সেমিনারের শেষে ছাত্রদের মোবাইল নিয়ে পুলিশ সুপারের ছবি তুলতে দেখা গিয়েছিল। বুধবার প্রসন্নদেব মহিলা কলেজও সেমিনারের শেষে ছাত্রীরা এগিয়ে এসে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
আনন্দচন্দ্র কলেজ এবং পিডি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা জানান, প্রথমে ভেবেছিলাম একটা গতানুগতিক সেমিনার হবে। কিন্তু তা হয়নি। ওঁর পরামর্শগুলি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। পিডি কলেজের অধ্যক্ষ শান্তি ছেত্রীর কথায়, “পুলিশ সুপারের এমন উদ্যোগ খুবই অভিনব সরাসরি ওঁর মুখ থেকে নানা সর্তক বার্তা শোনায় ছাত্রীদের মনে বিষয়গুলি গেঁথে থাকবে। আমরা ভবিষ্যতে আরও এই ধরণের সেমিনার করব।” |
|
|
|
|
|