পরিত্যক্ত পুলিশ আবাসনের ভিতরে খুনের ঘটনায় যুক্ত অভিযোগে মৃতের ৩ বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত ৮ জানুয়ারি মানবাজার থানার পুলিশের পরিত্যক্ত আবাসনে পরেশনাথ দে (৩০) নামে এক যুবকের থেঁতলান দেহ মেলে। সেই খুনের ঘটনায় পুলিশ এক সিপিএম নেতার ছেলে-সহ তিন জনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হলেন শ্রীকান্ত সেন, রাজেশ সেন ও বাবন গোস্বামী। প্রথম দু’জনের বাড়ি মানবাজারের পোদ্দার পাড়ায়, ও তৃতীয় জনের বাড়ি মানবাজারের নামোপাড়ায়। বুধবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
শ্রীকান্ত সেন সিপিএমের মানবাজার লোকাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য শীতল সেনের ছেলে। ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে পরেশ নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর দেহ মেলে দু’দিন পরে। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন। থানার সামনে বিক্ষোভও দেখান। বাসিন্দাদের দাবিতে পুলিশ-কুকুর নিয়ে এসে তল্লাশিও চালানো হয়। নিহতের বাবা ব্যবসায়ী গুরুপদ দে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ছেলের নেশা ছাড়ানোর জন্য চিকিৎসা চলছিল। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর দাবি, “তথ্য প্রমাণাদি জোগাড়ের জন্য তদন্ত দীর্ঘায়িত হয়েছে। ধৃতদের কাছে নিহতের দু’টি মোবাইল ফোন মিলেছে। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণও মিলেছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ৩ যুবক পরেশনাথবাবুর সঙ্গে মেলামেশা ও নেশা করতেন। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, ৬ জানুয়ারি বিকেলে কোনও কারণে ওঁদের সঙ্গে পরেশের বাবার সঙ্গে বচসা হয়। গুরুপদবাবু সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে ওদের অভিযোগ। নেশার ঝোঁকে রেগে গিয়ে ওরা পরেশের দেহে মাত্রারিক্ত নেশার ওষুধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেয়। সারাদিন একটা ঝোপের নীচে তাঁকে ফেলে রাখা হয়। পাছে ওদের নাম প্রকাশ করে দেয়, এই ভয়ে তারা কাঠ ও পাথর দিয়ে পরেশের মুখ থেঁতলে দেন। পরেশনাথবাবুর বাবা গুরুপদ দে বলেন, “আমার ছেলের খুনীদের কঠিন শাস্তি চাই।” ধৃতদের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ চৌধুরীর দাবি, “শীতলবাবু দলের লোকাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সর্ম্পকে নেই।” |