|
ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যাটনের
হাতবদল হল হায়দরাবাদে
স্টিভ ওয় |
|
একজন অস্ট্রেলীয় সমর্থক হিসেবে হায়দরাবাদ টেস্ট নিয়ে বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। সবটা এক লাইনেই সেরে ফেলা যায়-- দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জোরে ভারত সব বিভাগেই অস্ট্রেলিয়াকে দুরমুশ করে ছাড়ল।
বৃহত্তর ছবিটার দিকে তাকালে অবশ্য বোঝা যাবে এই টেস্টটা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ। হায়দরাবাদে সচিন, হরভজন এমনকী ধোনির কোনও সাহায্য ছাড়াই পুরোপুরি নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়ে দলকে জেতাল ভারতের নতুন প্রজন্ম। ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাটনটা হাতবদল হয়ে গেল হায়দরাবাদে। এটা ঠিক যে এই তরুণদের এখনও ভারতীয় পিচ আর পরিবেশ ছেড়ে বেরিয়ে বিদেশের মাঠে নিজেদের প্রমাণ করে দেখাতে হবে। তবে এই মুহূর্তে ওরা সাফল্যটা উপভোগ করুক।
হায়দরাবাদে ভারতের কয়েকটা লাভ হল। প্রথমত, দু’টো ক্ল্যাসিক টেস্ট ম্যাচ ইনিংস দেখে মনটা ভরে গেল। ক্রিকেটে ইদানীং যা দুর্লভ হয়ে গিয়েছে, সেই ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ স্ট্রোকের সৌন্দর্য্য দেখলাম। পিচে সময় কাটানোর শিল্প এবং আধুনিক ক্রিকেটাররা যে ব্যাপারটা পুরোপুরি ভুলে গিয়েছে, সেই প্রতি বলকে বাউন্ডারিতে না পাঠানোর শৃঙ্খলাও দেখা গেল চেতেশ্বর পূজারা-মুরলী বিজয়ের পার্টনারশিপে। বিশেষ করে পূজারার ব্যাটিং দারুণ লেগেছে। একটা ছেলে নিজের ইনিংস গড়তে এত খাটছে দেখে সত্যিই ভাল লাগে। ও যে ভাবে পরিকল্পনা করে ইনিংস সাজায়, তার মধ্যে রাহুল দ্রাবিড়ের একটা স্পষ্ট ছাপ দেখতে পাচ্ছি।
পূজারা-বিজয় পার্টনারশিপ যদি ভারতের জয়ের রাস্তা চওড়া করে থাকে, তা হলে সেই রাস্তায় চলে জয় নিশ্চিত করল অশ্বিন-জাডেজা স্পিন পার্টনারশিপ। জাডেজাকে দেখে আমি বেশ অবাকই! ছেলেটা যত বার বল করতে এল, তত উন্নতি করল। জাডেজা এক দিক থেকে একটানা ও রকম সূক্ষ্ন বৈচিত্র-সহ টাইট বোলিং না করলে উল্টো দিকে অশ্বিন অত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারে না।
অন্য দিকে, টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় হায়দরাবাদে টস জেতার কোনও সুযোগই নিতে পারল না মাইকেল ক্লার্ক। এই পিচে যা আদর্শ স্কোর হতে পারত তার থেকে অন্তত দু’শো রান কম তুলল ওরা। চেন্নাই আর হায়দরাবাদের পর ফিল হিউজেস নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। উসমান খাজাকে দলে ঢোকানো আর মাইকেল ক্লার্ককে ব্যাটিং অর্ডারে উপরে তুলে আনা দরকার। একমাত্র ক্লার্কেরই এই ধরনের পরিস্থিতি এবং পিচে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। খুব ভাল ফর্মেও আছে। বোলিং বিভাগে আশা করব নাথন লিয়ঁ বিশ্রাম পেয়ে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে ফিরবে। গত কয়েকটা সিরিজে দারুণ বল করা মিচেল জনসনকেও দলে রাখা জরুরি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মার খেলেও হায়দরাবাদে বলটা কিন্তু ভাল করেছে। |