সংগ্রাম সিংহ রায় • শিলিগুড়ি |
প্রথম দিনে দর্শক সংখ্যা ছিল সব মিলিয়ে আড়াই হাজার। দ্বিতীয় দিনে সংখ্যাটা হাজারের একটু কম। তৃতীয় দিনে এক হাজারের আটকে থাকল কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গন। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে আইএফএ শিল্ডে এবারের খেলা নিয়ে স্থানীয় দর্শকদের উৎসাহ কতটা তলানিতে এসে ঠেকেছে। এমনকী ইস্টবেঙ্গলের ‘সেকেন্ড হোম’ বলে যে সমর্থকদের জন্য পরিচিত শিলিগুড়ি তাঁদেরও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না এ বার। কারণ খুঁজে না পেয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছেন ক্রীড়া পরিষদ কর্তা থেকে মাঠে আসা গুটিকয় ফুটবল প্রেমী। যদিও আইএফএ ও স্পনসরদের অভিযোগের তীর ক্রীড়া পরিষদের দিকেই।
|
ফাঁকা স্টেডিয়ামে চলছে আইএফএ শিল্ডের খেলা। বুধবার শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র। |
প্রথম দিন দর্শকের অভাবকে প্রচারের অভাব বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ ও আইএফএ উভয় পক্ষ থেকেই। আপাতত দর্শক সংখ্যা নিয়ে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে ‘ব্যাকফুটে’ ক্রীড়া পরিষদ সচিব থেকে সব কর্তাই। বুধবার ফের ইস্টবেঙ্গলের খেলা থাকায় আশা করা গিয়েছিল সংখ্যাটা সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছবে। কিন্তু ম্যাচের বিরতিতে দেখা গেল এ দিনও সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ওই কুড়িয়ে বাড়িয়ে হাজার থেকে সামান্য বেশি। গ্যালারি অনুযায়ী হিসেব করলে সবচেয়ে বেশি দর্শক ছিলেন পশ্চিমের গ্যালারিতে। সেখানে ৭০০ জনের মতো দর্শক উপস্থিত ছিলেন। বাকি গ্যালারিগুলির অবস্থা শোচনীয়। পূর্ব গ্যলারিতে আড়াইশো ও দক্ষিণ গ্যালারিতে দুশো লোকের বেশি ছিল না। সবচেয়ে কম ছিল উত্তর গ্যালারিতে। সেখানে হাতে গুণে পঞ্চাশ জন। এই সংখ্যার দর্শক কুড়িয়েই শিলিগুড়িতে চলছে দুই শতাব্দী প্রাচীন আইএফএ শিল্ডের গুরুত্বপূর্ণ একটি খেলা।
অথচ শিলিগুড়ির বড় খেলার ইতিহাস কিন্তু চলতি ট্রেন্ডকে মোটেও সমর্থন করে না। তিলক ময়দান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনে পরিণত হওয়ার প্রথম টুর্নামেন্ট নেহেরু কাপে ৩০ হাজার দর্শকাসনে উপচে পড়ে ভিড়। উদ্যোক্তাদের দাবি, কমপক্ষে ৪০ হাজার দর্শক খেলা দেখেছে সেই সময়। গত মরশুমেই আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের মত খেলাতেও প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারের উপরে দর্শক হাজির ছিল ছোট দলগুলোর ম্যাচেও। শিল্ডের মাত্র কয়েক মাস আগে শিলিগুড়িতে ফেডারেশন কাপ নিয়ে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। এমনকী, ইস্টবেঙ্গল না মোহনবাগান কোন দলের খেলায় গ্যালারি ভরছে বেশি তা নিয়েও সমর্থকদের মধ্যে বিতর্কও ছিল তুঙ্গে। ২৫ হাজারের উপরে দর্শক ছিল বড় দলের প্রতিটি খেলাতেই।
কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনের পাশাপাশি রানিডাঙার আরও একটি মাঠেও বেশ কয়েকটি খেলা পড়েছে। তাতেও দর্শক হচ্ছে। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষ এক বার বলেছেন, “মাধ্যমিকের জন্য মাইকিং করা যায়নি তাই ভিড় হচ্ছে না।” পরক্ষণেই আবার জানিয়ে দিচ্ছেন, দুপুরে কেউ খেলা দেখতে উৎসাহী নন। মাঠ ভরানোর জন্য ক্রীড়া পরিষদ অনুমোদিত বিভিন্ন ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিকে অনুরোধ করা হলেও তারাও কেউ আসেননি বলে আক্ষেপ করেছেন অরূপরতনবাবু। কয়েকজন ক্রীড়া পরিষদ কর্তা এর দায় আইএফএ-র উপরেই চাপিয়েছেন। টিকিট বণ্টন নিয়ে তাদের অভিযোগ রয়েছে। এ দিকে আইএফএর পক্ষ থেকে দায় চাপানো হয়েছে ক্রীড়া পরিষদের উপরে। |