ডাইন অপবাদে মারধরের জের
মামলা তুলতে চাপ, থানায় নালিশ তৃণমূল নেতার নামে
ডাইন অপবাদে প্রৌঢ় দম্পতিকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই মামলা তুলে নিতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব চাপ দিচ্ছেন বলে এ বার অভিযোগ উঠল।
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের। গত রবিবার স্থানীয় ফতেশিংপুরের আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা শম্ভু মুর্মু ও তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মীদেবীকে গ্রামের মোড়লদের নেতৃত্বে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। লক্ষ্মীদেবীর এক আত্মীয় ওই রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার পর থেকেই তৃণমূলের চন্দ্রকোনা রোড ব্লক কমিটির সদস্য পবন সাউ এবং স্থানীয় নেতা অনিল মারিক, চণ্ডীচরণ ঘোষরা ওই দম্পতির বাড়ির লোকজনকে মামলা তুলে নিতে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। পবন সাউদের বিরুদ্ধে থানায় এবং বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন লক্ষ্মীদেবীর ভাই অশোক মাণ্ডি। গড়বেতা ৩ ব্লকের বিডিও সুশোভন মণ্ডলের বক্তব্য, “অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল নেতা পবনবাবু। তাঁর দাবি, “ওই দম্পতিকে মারধরের পর আমিই প্রথম পুলিশে খবর দিয়েছি। কাউকে কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। সিপিএমের চক্রান্তেই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” স্থানীয় বিধায়ক তথা যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতোরও বক্তব্য, “দলের নামে অপপ্রচার করতেই এই অভিযোগ।” সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক দীপক সরকার অবশ্য বলেন, “এলাকায় কী হচ্ছে, তা মানুষ দেখছেন। মিথ্যা কথা বলাই তো তৃণমূলের কাজ।”
গ্রামে রবিলাল মুর্মু নামে এক যুবকের মৃত্যুর পরেই জানগুরুর নিদানে ডাইন ঠাওরানো হয় লক্ষ্মীদেবীকে। সালিশি সভা বসিয়ে মোটা টাকা জরিমানা করা হয়। তা দিতে রাজি না হওয়ায় লক্ষ্মীদেবী ও শম্ভুবাবুকে বেধড়ক পেটানো হয়। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় লক্ষ্মীদেবীকে। ওই দম্পতির বড় ছেলে বাপি মুর্মুর অভিযোগ, “ঘটনার কথা থানায় জানালে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।” লক্ষ্মীদবীর ভাই অশোকবাবু বলেন, “গত সোমবার থেকে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা পবন সাউ ও আরও কয়েক জন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে ফল ভাল হবে না বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।”
এ দিকে, ওই আদিবাসী দম্পতিকে মারধরের ঘটনায় মঙ্গলবার এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে বুধবার মেদিনীপুর এসিজেএম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ফতেশিংপুর গ্রামে এখনও পুলিশি টহল চলছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.