নির্মাণের কয়েক দশক পরে ময়ূরাক্ষী-বক্রেশ্বর ও ময়ূরাক্ষী-দ্বারকা নামে দু’টি মেন ক্যানাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা। কারণ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ না হলে বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল-সহ মুর্শিদাবাদের একাংশ বোরো চাষে সেচের জল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
ময়ূরাক্ষী-বক্রেশ্বর ক্যানালটি দৈর্ঘে ২২.৯১ কিলোমিটার। বিশালপুর ও কান্দিশালা গ্রামের কাছে বক্রেশ্বর নদের একটি জলাধার আছে। ক্যানালটি ওই জলাধারে গিয়ে মিশেছে। অন্য দিকে, ময়ূরাক্ষী-দ্বারকা (দৈর্ঘ ১১.৮৮ কিমি) ক্যানালটি মহম্মদবাজারের দেউচাতে দ্বারকা নদে মিশেছে। ১৯৫১ সালে ২৯ জুলাই এই দু’টি ক্যানালের উদ্বোধন হয়েছিল। উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়। ৫.৬০ লক্ষ একর জমিতে বোরো চাষের জন্য ৩৫০০ কিউসেক জল দেওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারের অভাবে দু’টি ক্যানাল থেকে ২ হাজার কিউসেক মতো জল পাওয়া যেত। ফলে লক্ষ্য মাত্রা অপেক্ষা অনেক কম জমিতে বোরো চাষ করা হয়। |
তিলপারা ব্যারাজের এসডিও (বক্রেশ্বর ক্যানাল) দেবীদাস চট্টোপাধ্যায় ও মহম্মদবাজার সেচ দফতরের এসডিও (দ্বারকা ক্যানাল) ইলাহি বক্স বলেন, “সংস্কারের অভাবে ক্যানাল দু’টি থেকে পরিমাণ মতো জল দেওয়া যেত না। সে জন্য বর্তমানে ময়ূরাক্ষী ক্যানাল সার্কেলের সুপারিন্টেডেন্ট সুজিত কোনারের তৎপরতায় সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ৪ মার্চ পর্যন্ত গড়ে ৩০-৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।”
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২১ কিমি বক্রেশ্বর ক্যানাল সংস্কারের জন্য ৪.৩ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। তিনটি সংস্থা কাজের বরাত পায়। ডিসেম্বরে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কাজ শুরু হয় জানুয়ারি থেকে। আর দ্বারকা ক্যানালের প্রায় ৩ কিমি সংস্কারের দায়িত্ব পায় আর একটি সংস্থা। এই কাজের জন্য ২.১১ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। এই ক্যানাল সংস্কার অবশ্য ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে দু’টি কাজই মার্চের প্রথম সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা। সুজিতবাবু জানান, এমনিতে তিলপারা জলাধার থেকে ৬ মাস প্রতিদিন ৬৭ কিউসেক জল বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রকে দিতে হয়। এ ছাড়া, ঝাড়খণ্ড (বিহার ক্যানাল) ২৪-৩০ হাজার কিউসেক জল তাদের ক্যানালের জন্য নেয়। তাঁর কথায়, “জল নিয়ে এক কিছু সমস্যার মধ্যেও যাতে লক্ষ্যমাত্রা জমিতে বোরো চাষ হয়, সে জন্য অনেকদিন ধরে ক্যানাল সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। দু’টি কাজই মার্চের প্রথম সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা তাতে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে শেষ করতে পারবে না ঠিকাদাররা। তবে কোনও ভাবেই মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের বেশি সময় দেওয়া যাবে না। কাজ শেষ করতে না পারলে ঠিকাদারদের কাছে জবাব চাওয়া হবে।” |