এখনই কিনে খেতে হচ্ছে জল, হতাশা উখড়ায়
ধিকাংশ এলাকাতেই জলের পাইপলাইন নেই। যেখানে রয়েছে, সেখানে কেউ জল পাচ্ছেন সপ্তাহে এক দিন। কেউ আবার তা পাচ্ছেন দু’সপ্তাহ ছাড়া। পুকুর, খাল, কুয়ো শুকোতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। তাই পানীয় জলের সঙ্কটও বাড়ছে অন্ডালের উখড়ায়। অনেকে ইতিমধ্যেই জল কিনে খেতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উখড়া বাজারের একাংশ, বয়েজ হাইস্কুল, ডোমপাড়া, মুসলিমপাড়া, ধীবরপাড়া, পুরনো হাটতলা, শুকোপাড়া, বাউড়িপাড়ায় জলের পাইপলাইন থাকলেও মাসে খুব বেশি হলে তিন দিন জল মিলছে। ডাঙালপাড়া এবং সফিকনগরের অধিকাংশ এলাকায় আবার জলের পাইপলাইনই নেই। মুসলিমপাড়া, কোড়াপাড়া এবং বড়পাড়ায় কুয়োয় জল মিলছে না। অন্য এলাকার কুয়োয় জলস্তর দ্রুত নামছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কালিয়া বাউড়ি জানান, আগে শুকোবাঁধের অনেকটা সমস্যা মেটাত। দীর্ঘদিন সেই বাঁধের সংস্কার না হওয়ায় জল ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ইসিএল বা পঞ্চায়েত কেউই এখনও পর্যন্ত ট্যাঙ্কারে জল সরবরাহের ব্যবস্থা না করায় নাকাল হতে হচ্ছে।
উখড়া বণিক সংগঠনের সভাপতি মহাদেব দত্ত জানান, ছোট এক ট্যাঙ্কার জল কিনতে খরচ হচ্ছে সাড়ে তিনশো টাকা। তাতে চলছে বড় জোর সাত দিন। ওই জল নিয়ে এসে কুয়োয় ফেলা হয়। এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা প্রতি টিন জল কিনছেন চার-পাঁচ টাকায়। মহাদেববাবু জানান, একটি জলপ্রকল্প হওয়ার পরিকল্পনার কথা তাঁরা জানতে পেরেছেন। সেই কাজ যাতে দ্রুত হয়, বণিক সংগঠনের পক্ষে তাঁরা সেই আবেদন করেছেন। উখড়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা রুইদাস বলেন, “এ নিয়ে আমার কিছু করার নেই। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর যা করার করবে।
পাইপ ফুটো। অপচয়ও হচ্ছে জল। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “উখড়া থেকে কাজোড়া অবধি একই অবস্থা। প্রশাসন এ নিয়ে ইতিবাচক নেবে বলে আশা করছি।”
সিপিএমের দামোদর-অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় জানান, এক বছর আগে তিনি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে লিখিত ভাবে উখড়া ও লাগোয়া এলাকায় জলপ্রকল্পের কোনও পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চেয়েছিলেন। ওই দফতর থেকে তাঁকে জানানো হয়েছিল, ১২ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি জলপ্রকল্প নির্মাণ হবে। খরচের অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে তখন জানানো হয়েছিল, দাবি গৌরাঙ্গবাবুর।
সদ্য আইএনটিটিইউসি কোর কমিটি থেকে পদত্যাগ করে ফের সিপিআইএমএলে ঘেঁষা নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯৯৪-৯৫ সালে জলের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন। ১৯৯৫-এ টানা তিন দিন উখড়ায় ধর্মঘট করা হয়। তার পরে আসানসোলের কালাঝড়িয়া প্রকল্প থেকে পাইপলাইনে জল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়। বছরখানেক পরেই বোঝা যায় নতুন জলপ্রকল্প ছাড়া এ ভাবে সমস্যা মিটবে না। তিনি বলেন, “নতুন জলপ্রকল্পের কথা শুনছি। দেখা যাক কী হয়। প্রয়োজনে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।”
তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর একটি নতুন জলপ্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়েছে। ১৯ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা খরচ হবে। ওই কাজের দরপত্র ডাকা হয়েছে। এ বার কাজের নির্দেশ দেওয়া হবে। তিনি জানান, অজয় নদের জল নিয়ে প্রকল্প হবে। ওই জল পাইপলাইনে শঙ্করপুর জলাধারে আসবে। সেখান থেকে খাঁদরা ‘ওভারহেড’ ট্যাঙ্কে জমা হবে। শঙ্করপুর থেকে সরাসরি উখড়া পঞ্চায়েত এবং লাগোয়া বাঁকোলা চকে জল পাঠানো হবে। খাঁদরা থেকে জল সরবরাহ হবে খাঁদরা, দক্ষিণখণ্ড, ময়রা ও সিঁদুলিতে। এত দিন এই দু’টি জলাধারে আসানসোলের কালাঝরিয়া থেকে জল আসত। এ ছাড়া ছোড়ায় একটি ‘ওভারহেড’ ট্যাঙ্কে অজয় নদের একটি প্রকল্প থেকে জল পাঠানো হয়। ওই লাইনটির সংযোগ ছিন্ন করে শঙ্করপুর জলাধার থেকেই পাইপলাইন দিয়ে জল পাঠানো হবে। তাতেই অনেক সমস্যা মিটবে বলে বিধায়কের দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.