দমকল চাই, বলছে খাতড়া
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল দমকলের জন্য এখনও চেয়ে থাকে সদরের দিকেই। জঙ্গলমহলের মহকুমা শহর হওয়া সত্ত্বেও খাতড়ায় আজও দমকল কেন্দ্র তৈরি হল না। এ নিয়ে তাই এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।
খাতড়া মহকুমা এলাকায় আগুন লাগলে বাঁকুড়া শহর থেকে দমকলের গাড়ি আসতে ঘণ্টাখানেক পেরিয়ে যায়। বাসিন্দাদের চেষ্টায় তত ক্ষণে আগুন আয়ত্তে এলে রক্ষা। নয়তো খবর পাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে বাঁকুড়া থেকে দমকল যখন ঘটনাস্থলে আসে, তখন সব শেষ। এমনটাই অভিজ্ঞতা এলাকার বাসিন্দাদের। ফলে বছরভর আগুন নিয়ে আতঙ্কে বাস বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের। অবিলম্বে তাই খাতড়ায় একটি দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শেষ করার দাবি উঠেছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৯৮৬ সালের ২৭ মার্চ অতিরিক্ত মহকুমার স্বীকৃতি পায় খাতড়া। ১৯৯২ সালের ২ নভেম্বর জেলার তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ মহকুমায় উন্নীত হয় দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের এই জনপদ খাতড়া সদর। সিমলাপাল, তালড্যাংরা, সারেঙ্গা, রাইপুর, রানিবাঁধ, হিড়বাঁধ ও ইঁদপুর—এই ৮টি ব্লক নিয়ে গঠিত খাতড়া মহকুমা। বাঁকুড়া সদর থেকে খাতড়ার দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার, রানিবাঁধ ৬০ কিলোমিটার, সারেঙ্গা ৬২ কিলোমিটার, রাইপুরের ফুলকুসমা ৭০ কিলোমিটার। এইসব এলাকায় আগুন লাগলে বাঁকুড়া থেকে দমকলের ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করে। পুলিশ ও দমকলের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত খাতড়া মহকুমায় ৪০টির বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৫০টি ধান ও খড়ের পালুই পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে ৩০টি বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগুন লাগার পরে খবর পেয়ে বাঁকুড়া থেকে দমকলের ইঞ্জিন যখন এসে পৌঁছায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে যায়।
খাতড়ার জালতোড় গ্রামে শুক্রবার দুপুরে আগুন লেগে চারটি বাড়ি পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জালতোড় গ্রামের বাসিন্দা নিমাই সর্দার, মঙ্গল সর্দারের আক্ষেপ, “সময়মতো খবর দেওয়া হয়েছিল বাঁকুড়ায়। কিন্তু এতটা পথ পেরিয়ে দমকল যখন এল, তখন প্রায় সব শেষ। খাতড়ায় দমকল কেন্দ্র থাকলে আমাদের বাড়িগুলি কিছুটা হলেও রক্ষা পেত।” স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাঁকুড়া থেকে এত দূরত্বের জন্য দমকল আসতে যথেষ্ট সময় লাগছে। খাতড়ায় দমকল কেন্দ্র থাকলে এই সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হবে। বাঁকুড়া দমকল কেন্দ্রের ওসি সুপ্রিয় মণ্ডলের বক্তব্য, “যে কোনও এলাকায় আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাওয়া হয়। কিন্তু খুব বেশি দূরত্ব হলে দমকল কর্মীদের পৌঁছাতে অনেকটা সময় চলে যায়। তখন গিয়ে দেখা যায় আগুন অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন নেভাতে যথেষ্ট অসুবিধা হয়।” প্রশাসন সূত্রের খবর, খাতড়ায় একটি দমকল কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী দুর্গাপুজোর আগেই চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। মহকুমাশাসক (খাতড়া) দেবপ্রিয় বিশ্বাসও দমকল কেন্দ্র না থাকায় সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের অফিসের পিছনেই দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সেই কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। দমকল কেন্দ্র চালু হয়ে গেলেই সমস্যা মিটে যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.