|
|
|
|
ডিএসপি হত্যায় সিবিআই তদন্তে রাজি অখিলেশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
চাপের মুখে পড়ে উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে ডিএসপি জিয়া উল হকের হত্যার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল অখিলেশ সিংহ যাদবের সরকার।
সপা ঘনিষ্ঠ নির্দল বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রাজা ভাইয়ার বিরুদ্ধে ওই পুলিশ অফিসারের হত্যার অভিযোগ ওঠায় এখন অস্বস্তিতে সপা শিবির। আইন-শৃঙ্খলার অবনতিতে আজ রাষ্ট্রপতি শাসন দাবি করেছেন বিরোধী বহুজন পার্টি নেত্রী মায়াবতী। কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘটনার নিন্দা করলেও বিষয়টি নিয়ে চুপ কেন্দ্র। প্রথমে রাজা ভাইয়ার পক্ষে আজ প্রশাসনের মুখ রক্ষায় আসরে নামতে বাধ্য হন অখিলেশ। প্রথমে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয় রাজা ভাইয়া ওরফে রঘুরাজ প্রতাপ সিংহকে। কিন্তু তাতেও জনরোষ না কমায় শেষ পর্যন্ত ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেন অখিলেশ। কিন্তু এ দিন রাত পর্যন্ত রাজা ভাইয়াকে গ্রেফতার করে উঠতে পারেনি উত্তরপ্রদেশ সরকার।
উত্তরপ্রদেশে সপা নেতৃত্ব ক্ষমতায় আসার কিছু দিনের মধ্যেই ওই রাজ্যে ‘গুন্ডারাজ’ চলছে, অভিযোগ তোলেন মায়াবতী। বসপার মতে, উত্তরপ্রদেশে সপা ক্ষমতায় এলেই তা দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অখিলেশের জমানাও ব্যতিক্রম হয়নি। মাঝে মাঝে অখিলেশ সরকার নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে তাঁর বাবা মুলায়ম সিংহ যাদবকেই।
|
|
ইস্তফার পরে রাজা ভাইয়া। সোমবার। ছবি: পিটিআই |
দিনদুপুরে ডিএসপি হত্যার ঘটনা অখিলেশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিরই প্রমাণ বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। মায়াবতীর বক্তব্য, “আইনের রক্ষক যারা তাদেরই জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। আম-আদমির কী তাহলে কী হাল হচ্ছে তা ওই ঘটনা থেকে পরিষ্কার।”
খুন, অপহরণ, ডাকাতির মতো ৩৫টি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত রাজা ভাইয়ার সঙ্গে সপা শিবিরের ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘ দিনের। বিরোধীদের অভিযোগ, সমাজবাদী পার্টিকে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আর্থিক সাহায্য করে আসছেন রাজা ভাইয়া। সেই আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে তাঁকে খাদ্য দফতরের দায়িত্ব দেন অখিলেশ। যদিও আগে খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজা ভাইয়ার বিরুদ্ধে বড় মাপের রেশন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এমনকী ২০০২ সালে মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। ক্ষমতায় এসে তাঁকে মুক্ত করে দেন মুলায়ম। সে সময়ে যে পুলিশ অফিসার ওই মামলার তদন্ত করছিলেন তাঁরও রহস্যজনক ভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। যার পিছনে রাজা ভাইয়ার হাত রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
প্রতাপগড়ে নিহত ডিএসপি জিয়া উল হকও রাজা ভাইয়ার বিরুদ্ধে একটি সাম্প্রদায়িক হিংসার অভিযোগের তদন্ত করছিলেন। তাঁর স্ত্রী পরভিনের অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরেই তাঁর স্বামীকে ওই তদন্তের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন রাজা ভাইয়া। তা না হলে তাঁকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বক্তব্য, গত শনিবার বল্লিপুর গ্রামে একটি জমি সংক্রান্ত বিবাদের মীমাংসা করতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে আক্রান্ত হন ওই ডিএসপি। পরে ভিড়ের মধ্যে থেকে চার অভিযুক্ত বুকে ও মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেন ডিএসপিকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত সবাই রাজা ভাইয়ার ঘনিষ্ঠ।
প্রথমে রাজা ভাইয়াকে খাদ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার নির্দেশ দেন অখিলেশ। জিয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন “ধৃতদের ছাড়া হবে না।” তাঁদের ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া ছাড়াও পরিবারের দু’জনকে চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেন অখিলেশ। ইস্তফার পরে রাজা ভাইয়া বলেন, “আমায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। যাতে সরকার বিব্রত না হয় তাই মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলাম।” |
|
|
|
|
|