কাটোয়া ‘ধর্ষণে’ গোপন জবানবন্দি, পুলিশ এখনও ধন্দে
র্ষণের মামলায় কাটোয়া আদালতের বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দিল টিকরখাঁজি গ্রামের কিশোরী। বর্ধমান জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, এর আগে জেরায় তার কথায় অসঙ্গতি মিলেছে। তবে বিচারকের কাছে সে কী বলেছে, তা সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। শনিবার গভীর রাতে টিকরখাঁজির মৌরবীতলায় বাড়ির লোকজনকে আটকে রেখে বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ এবং দু’জনের শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবার দুপুরে মেয়েটি কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ঘটনাস্থলে কুকুর নিয়ে গিয়ে তদন্ত চালায় পুলিশ। কিন্তু তার পরেও কেউ ধরা পড়েনি। ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের ‘প্রমাণ’ মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছিল। তার জেরে সিপিএম পুলিশের ‘নৈতিক অধিকার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির তরফে দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপিও।
বস্তুত, ঘটনার খবর জানাজানি হওয়া ইস্তক বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় রয়েছে সিপিএম। রবিবার দুপুরে ওই কিশোরী থানায় অভিযোগ জানানোর সময়ে দলের স্থানীয় নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়েই টিকরখাঁজির বাসিন্দা তথা কাটোয়া ১ ব্লকের সুদপুর পঞ্চায়েতে সিপিএমের প্রাক্তন সদস্য ক্ষীরোদ মণ্ডল জানান, সকালে খেতে যাওয়ার সময়ে তিনি কিশোরীর বাবা-মায়ের কাছে ঘটনাটি শোনেন। তাঁদের আটকে রেখে বাড়ির ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। এ দিন কাটোয়া মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে সিপিএমের জেলা পরিষদ সদস্য জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় জানতে চেয়েছেন, টিকরখাঁজিতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলার এক্তিয়ার পুলিশের আছে কি না। মহিলা সমিতির নেত্রী তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সাধনা মল্লিকও একই প্রশ্ন তুলেছেন। দলের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “যখন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য মেয়েটির দেহরস কলকাতায় পাঠানো হয়েছে, পুলিশ আগেভাগে এমন কথা বলতে পারে না।” আজ, মঙ্গলবার গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিনিধিরা টিকরখাঁজিতে যাবেন বলেও তিনি জানান। পুলিশ অবশ্য বলছে, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না তা পরে বোঝা যাবে। কিন্তু ডাক্তারি পরীক্ষায় তার দেহে কোনও বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ চোটের চিহ্ন মেলেনি। সেটুকুই বলা হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জেরায় কিশোরীর বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি মিলেছে। লিখিত অভিযোগে মেয়েটি জানিয়েছিল, ৯-১০ জন দুষ্কৃতী ছিল। তারা গাড়ি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু জেরায় সে মোটে চার দুষ্কৃতীর কথা বলেছে। কোনও গাড়ির কথাও বলেনি। লিখিত অভিযোগে লক্ষাধিক টাকা চুরির কথা ছিল। কিন্তু জেরায় মেয়েটি টাকার অঙ্ক বলতে পারেনি। ধর্ষণ প্রসঙ্গেও সে কিছু অসংলগ্ন কথা বলেছে। তবে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “পুলিশের উচিত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সত্যিটা বের করা।” রবিবারই ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছিলেন বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) তরুণ হালদার, সিআই শচীন্দ্রনাথ পড়িয়া এবং ওসি সনৎ দাস। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ‘মোস্তাফা’ নামে কাউকে খুঁজতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। শুধু ওই এলাকা নয়, আরও দু’জায়গায় একই নামে কাউকে খোঁজা হয়। কিন্তু ওই দুষ্কৃতীরা কারা, কোথা থেকে আসে, তা পরিষ্কার নয়। পুলিশের অনুমান, ব্যান্ডেল-কাটোয়া রেললাইনের ধারে জুয়ার আসরে এদের আনাগোনা রয়েছে। সম্ভবত পুলিশের তাড়া খেয়ে দুষ্কৃতীরা ওই এলাকায় ‘আশ্রয়’ নিত। সেই সূত্রেই ওই ‘মোস্তাফা’র খোঁজ। পুলিশ জানায়, এক জনের খোঁজ করতে দুষ্কৃতীদের দল বাড়ি-বাড়ি ঢুকে হামলা চালাচ্ছে, এমন ঘটনা সচরাচর শোনা যায় না। মোস্তাফা কে, তা জানার চেষ্টা চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.