সংগ্রাম সিংহ রায় • শিলিগুড়ি |
বাংলাদেশ এখন অগ্নিগর্ভ। তাই মুক্তিযোদ্ধা আইএফএ শিল্ডে খেলতে আসতে পারবে না শিলিগুড়িতে। উদ্যোক্তারা তা জানানোর পরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই হতাশ। ১১৭তম আইএফএ শিল্ডের গুরুত্বপূর্ণ ছ’টি ম্যাচের আয়োজক শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের একাংশও তা বুঝতে পারছেন। রবিবার শিলিগুড়িতে শিল্ডের খেলা শুরুর আগের দিন যখন বিষয়টি জানা গেল তার আগে পর্যন্ত প্রচার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা দলের আসা নিয়ে। টিকিট কাউন্টারের উপরে টাঙানো ঢাউস হোর্ডিংয়ে এখনও ম্যাচের সূচিতে তাদের নামটা জ্বলজ্বল করছে। অথচ শেষ বেলায় ওই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভিসা পায়নি দলটি। তাতে এই যাত্রা শিল্ডের খেলায় যোগ দিচ্ছে না তারা। |
ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব।
রবিবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
শহরবাসীর একাংশ বিশেষ করে যাঁরা দেশভাগের সময় পূর্ববঙ্গ থেকে এসেছিলেন, প্রবীণ নাগরিকদের অনেকে উৎসাহ দেখান বাংলাদেশের দলটির ব্যাপারে। কর্মকর্তারা অবশ্য রবিবার উদ্বোধনী ম্যাচের পরও মুক্তিযোদ্ধার বদলে কোন দল খেলবে তা ঠিক করতে পারেননি। তাতে শিল্ডের জৌলুস অনেকটাই ম্লান হয়েছে বলে স্পনসর সংস্থার কর্মকর্তারাও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সাবেক পূর্ববঙ্গের বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা তল্পিতল্পা গুটিয়ে এসে এখন এ দেশের নাগরিক। তাদের একটা বড় অংশ মুক্তিযোদ্ধার খেলা নিয়ে উৎসাহী ছিলেন। কিন্তু তা মাটি যাওয়ায় উদ্বোধনী ম্যাচেও মাঠমুখো হননি সুভাষ দাস, বরুণ চৌধুরীদের মতো অনেকেই। তাঁদের আক্ষেপ, ফের এই সুযোগ কবে আসবে তা জানা নেই।
আইএফএ কর্মকর্তারা তোড়জোড় শুরু করেছেন মুক্তিযোদ্ধার বদলে অপর কোন দল খেলবে তা নিয়ে। তাঁদের একাংশ জানান, নেপাল, সিকিম-সহ কয়েকটি জায়গার বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তবে কোনওটাই চূড়ান্ত হয়নি। রবিবারও শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্তারা জানান, শেষ পর্যন্ত কী হবে তাঁরাও বুঝতে পারছেন না। গত শুক্রবার থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হলে এই পরিস্থিতিতে তাতে সাড়া পড়েনি। উদ্যোক্তা আইএফএ’র কর্মকর্তারা তাই মাঠে দর্শক টানতে ইস্টবেঙ্গলের উপরেই ভরসা করছেন। শিলিগুড়িতে লাল হলুদের সমর্থক রয়েছে। আইএফএর কো-অর্ডিনেটর দেবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে শনিবারই জানান, মুক্তিযোদ্ধা আসছে না। পরিবর্তে কাকে আনা হবে শীঘ্রই জানানো হবে। তাতে এ দিন পর্যন্ত যাঁদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা দল আসবে বলে ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল সেটাও শেষ হয়ে যায়।
উদ্বোধনী ম্যাচের দিন সকাল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কাউন্টারের আশেপাশে লাল-হলুদ পতাকা নিয়ে অত্যুৎসাহী কয়েকজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। মাঠে দর্শক টানতে না পারার অপর কারণ হিসাবে ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা দায়ি করছেন মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং তার পরই উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হতে চলার বিষয়টি। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, “মাধ্যমিকের কারণে মাইকে প্রচার করা যায়নি। যা খুবই দরকার ছিল।”
অন্যদিকে শিলিগুড়ি পাচ্ছে প্রাথমিকভাবে ৬টি ম্যাচ। একটি সেমিফাইনাল হওয়ার কথা রয়েছে। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহন বাগানের খেলা হলে তা নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে আইএফএ সল্টলেক স্টেডিয়ামে করানোর কথাই জানিয়েছেন। আইএফএ’র ওই সিদ্ধান্তে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারাও খুশি নয়। |