ডিঙি-নৌকা উল্টে দামোদরে নিখোঁজ হওয়া আরও এক যুবকের দেহ উদ্ধার হল রবিবার। বেলা এগারোটায় ডুবুরিরা জলের তলা থেকে দেহটি তোলেন। পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “মৃতের নাম তারাপদ মালাকার (১৮)। রঘুনাথপুর থানার পাথরবাড়ি গ্রামে তাঁর বাড়ি।” তিনি এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। শনিবার ওই গ্রামেরই আরও তিনজনের দেহ উদ্ধার হয় দামোদর থেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত্রে রঘুনাথপুর থানা এলাকার পাথরবাড়ি গ্রাম থেকে ৩২ জন কনেযাত্রী দামোদরের ওপারে ঝাড়খন্ডের সিমপাথর গ্রামে একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। |
তারাপদ মালাকারের দেহ নিয়ে আসা হচ্ছে বুরুডি ঘাটে। ছবি: প্রদীপ মাহাতো। |
তাঁরা তিনটি ডিঙিতে ছিলেন। দু’টি ডিঙি এগিয়ে যায়। শেষের ডিঙিতে ছিলেন ১১ জন। মাঝ দামোদরে সেই ডিঙির পাটাতন খুলে জল ঢুকতে শুরু করে। ওই ডিঙির যাত্রীরা এগিয়ে যাওয়া ডিঙির যাত্রীদের মোবাইলে ফোন করে সাহায্য চান। ডুবন্ত ডিঙির যাত্রীরা সবাই দামোদরে ঝাঁপ দেন। তাঁরা সাঁতরে ভেসে থাকার চেষ্টা করেন। অন্য ডিঙি ফেরত এলে সাত জন তাতে ওঠেন। কিন্তু চার জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। সেই রাতেই প্রশাসন সন্ধানের চেষ্টা করে।শনিবার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডুবুরিরা তল্লাশিতে নামেন। তিন জনের দেহ মেলে। আলোর অভাবে শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা খোঁজ বন্ধ রাখেন। রবিবার সকালে ফের তল্লাশি শুরু করা হয়।
ডুবুরিদের একজন অনুপকুমার বিশ্বাস বলেন, “জলের নীচে আগাছায় দেহটি আটকে ছিল। তাই উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়েছে।” শুক্রবার রাত থেকেই পাথরবাড়ি গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রবিবারও গ্রাম প্রায় সুনসান ছিল। মাঝে মধ্যে কয়েকটি বাড়ি থেকে কান্না ভেসে আসছিল। স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ মালাকার, সুনীলকুমার ধীবররা বলেন, “এপারের একাধিক গ্রামের লোকজনকে রোজ কাজের জন্য ওপারে যেতে হয়। ওপারের লোকজনও এপারে আসেন। জীবিকার জন্য ডিঙি বা ছোট নৌকায় পারাপার করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই। সেতু তৈরি করা হলে এই রকমের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকত না।” |