পুলিশের সামনেই দুপুর ১টা থেকে সাউন্ড বক্স বেঁধে চলছিল তৃণমূলের সভা। দু’একজন কয়েকবার মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা তুললেও কান দিচ্ছিলেন না কেউই। পুলিশের তরফে অস্বস্তি প্রকাশ করলেও বক্স বন্ধ করে দেওয়ার মতো সাহস পাচ্ছিলেন না কোনও অফিসার। বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব সভায় যোগ দিয়েই বন্ধ করে দেন সাউন্ড বক্স। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বক্স বাজানোয় তিরস্কার করেন দলের নেতাদের। খালি গলায় বক্তব্য রেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। মন্ত্রীর ওই ভূমিকায় স্বস্তি প্রকাশ করেন প্রশাসনিক কর্তারা। রবিবার ঘটনাটি ঘটে ফাঁসিদেওয়ার জালাস-নিজামতারা স্কুলের মাঠে।
|
তৃণমূলের সভা।—নিজস্ব চিত্র। |
মন্ত্রী বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষায় সময় মাইক বাজিয়ে সভা কেন, কোনও অনুষ্ঠান ঠিক নয়। ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধে যাতে না হয় সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখা উচিত। আমি জানতাম না এখানে বক্স বাজানো হচ্ছে। আসার সময়ই বিষয়টি জানতে পেরে বক্স বন্ধ করে দিয়েছি। আশা করছি, সামান্য সময় বক্স বাজানোর জন্য পরীক্ষার্থীদের খুব বেশি অসুবিধে হয়নি।” এদিনের সভায় উপস্থিত তৃণমূলের মহাসচিব কৃষ্ণ পাল, জেলা নেতা দীপক শীল, সৌমিত্র কুন্ডুরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
কংগ্রেসের তরফে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি প্রণবেশ মণ্ডল দাবি করেন, যেখানে তৃণমূলের সভা চলছিল তার আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রয়েছে। সকাল থেকে বক্সের আওয়াজে তাঁরা পড়াশোনা করতে পারেননি। এমনকী ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দলীয় সভায় সামিল করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রণবেশবাবু বলেন, “তৃণমূলের নেতারা কোনও আইন মানতে চান না। সেটাই আমরা দেখেছি জালাসের সভায়। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সব জেনেও কিছু করার সাহস পাননি। কিছু করলে তাঁদের সমস্যায় পড়ার ভয় রয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সভায় পৌঁছে মানুষের ক্ষোভ বুঝতে পেরে বক্স বন্ধ করে দিয়েছেন।” ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিডিও বীরুপাক্ষ মৈত্র বলেন, “বক্স বাজানো হবে না বলেই আমার কাছ থেকে সভার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
দলীয় সূত্রের খবর, জালাস-নিজামতারা পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন অনেকটাই দুর্বল। এ দিন এলাকার কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ জব্বার তাঁর অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এ ছাড়া খড়িবাড়ি ও ফুলবাড়ি এলাকা থেকেও কিছু কংগ্রেস সমর্থক তৃণমূল যোগ দেন বলে তাঁরা দাবি করেছেন। প্রণবেশবাবু বলেন, “মহম্মদ জব্বার অনেকদিন আগেই তৃণমূলে গিয়েছেন। আর কেউ গিয়েছে বলে খবর নেই।” |