পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের পচাগলা দেহ মিলল গ্রামেরই একটি খড়ের গাদা থেকে। রবিবার দুপুরে চণ্ডীতলার পাঁচঘরা দক্ষিণপাড়ার ঘটনা। শুভজিৎ হালদার (১১) নামে ওই ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। প্রতিবেশী উত্তম বিশ্বাস নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে শুভজিৎকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগ হয়েছে থানায়। তার বাড়িতে ভাঙচুর চালান গ্রামবাসীরা। উত্তম পলাতক।
|
শুভজিৎ। |
খুনের কারণ নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। শুভজিতের পরিবারের লোকজনও কিছু বুঝতে পারছেন না। ইতিমধ্যে কয়েক বার অভিযুক্ত যুবক শুভজিতের মুক্তিপণ বাবদ চার কোটি টাকা দাবিও করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা বলেন, “কী কারণে ওই ছাত্রটিকে খুন করা হল তা পরিষ্কার নয়। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই অভিযুক্ত খুন করে অপহরণের ছক কষে। মনে হয়, যে দিন ছাত্রটি নিখোঁজ হয়, সে দিনই খুন করা হয়।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভজিতের বাবা গোকুল হালদারের গ্রামেই একটি মুদি দোকান রয়েছে। সম্প্রতি জমি বিক্রি করে তিনি কিছু টাকা পান। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শুভজিৎ টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরে ব্যাগ রেখে বেরিয়েছিল। তার পর আর তার খোঁজ না মেলায় গোকুলবাবু রাতেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগ, পরের দিন উত্তম এক প্রতিবেশীকে এসএমএস পাঠিয়ে ছেলের মুক্তিপণ বাবদ গোকুলবাবুর থেকে চার কোটি টাকা দাবি করে। তার পর একই ভাবে কয়েক দিনের মধ্যে আর প্রতিবেশীকেও এসএমএস করে এবং শনিবার গোকুলবাবুকেই ফোন করে উত্তম একই রকম মুক্তিপণ দাবি করে বলে নালিশ। গোকুলবাবু ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তমের বিরুদ্ধে ছেলেকে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন পুলিশের কাছে। |
গোকুলবাবুর বাড়ির পাশেই উত্তমের বাড়ি। তার পাশের ওই খড়ের গাদা থেকে রবিবার দুপুরে দুর্গন্ধ পান কয়েক জন গ্রামবাসী। পরে শুভজিতের দেহ মেলে। গ্রামবাসীরা উত্তমের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। তাকে গ্রেফতারের দাবিতে দেহ আটকে ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভও হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে দেহটি উদ্ধার করেন। গোকুলবাবু বলেন, “উত্তম কী কারণে ছেলেকে খুন করল বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে ওর শত্রুতা ছিল না। এই ক’দিন ওর মোবাইলে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করেছি। প্রতিবারই ওর ফোন বন্ধ ছিল।” |