টুকরো খবর |
গ্রামোন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হল দেড় গুণ |
গত লোকসভা ভোটে সাফল্য আনতে সাহায্য করেছিল একশো দিনের কাজের প্রকল্প। আগামী লোকসভা ভোটেও এমন কিছু কল্যাণমূলক প্রকল্পকে হাতিয়ার করতে চাইছে মনমোহন সিংহের সরকার। ভোটের মুখে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের শেষ বাজেটে তাই গ্রামোন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ল বিপুল পরিমাণ। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক পাবে ৮০,১৯৪ কোটি টাকা। এই অর্থের বেশির ভাগটাই যাবে মহাত্মা গাঁধী কেন্দ্রীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান তহবিলের আওতায়। এ দিন লোকসভায় বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী জানান, এ বছর গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে ৩৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও ইন্দিরা আবাস যোজনা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ যথাক্রমে ২১,৭০০ ও ১৫,১৮৪ কোটি। অর্থমন্ত্রীর আশা, ডিসেম্বরের মধ্যেই মোট বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রামোন্নয়ন খাতে ব্যয় করতে সক্ষম হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক। বাজপেয়ী সরকারের হাত ধরে ২০০০ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার যাত্রা। উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করা। ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রীর দাবি, অনেকাংশেই পূরণ হয়েছে সেই উদ্দেশ্য। এ বার পালা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার দ্বিতীয় পর্ব শুরু করার। এর আওতায় আসবে অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলি। খুব শিগ্গিরই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার দ্বিতীয় পর্বের যাবতীয় বৃত্তান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ।
|
লক্ষ্য বিমার পরিসর বৃদ্ধি |
লক্ষ্য আরও বেশি মানুষকে বিমার আওতায় আনা। সেই উদ্দেশ্যেই অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, টায়ার টু এবং তার পরের শ্রেণির সব শহরে বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ-র অনুমতি ছাড়াই শাখা খুলতে পারবে বিমা সংস্থাগুলি। সেই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে ভারতের যে সব শহরে জনসংখ্যা দশ হাজার বা তার বেশি, সেখানে একটি দফতর খুলবে এলআইসি। খোলার চেষ্টা করা হবে অন্তত একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সাধারণ বিমা সংস্থার অফিসও। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার আওতায় আনা হবে রিকশা, অটো-রিকশা এবং ট্যাক্সি চালক, সাফাইকর্মী, কাগজ-কুড়ানি এবং খনিশ্রমিকদেরও।
|
|
প্রহরা: সংসদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাজেটের নথি। ছবি: রয়টার্স |
|
কর দিতে উৎসাহ |
আর না লুকিয়ে কর জমা দিন, সরাসরি আহ্বান অর্থমন্ত্রীর। তাঁর দাবি, নথিভুক্তি অনুযায়ী, পরিষেবা কর দেওয়ার কথা ১৭ লক্ষ ব্যবসায়ীর। সেখানে রিটার্ন জমা দেন ৭ লক্ষ! এত দিন কর ফাঁকির অপরাধ ‘মাফ’ হয়ে যাবে এ বার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা জমা দিলে। তাঁর ঘোষণা, যাঁরা ২০০৭ সালের ১ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বকেয়া সমস্ত পরিষেবা কর সঠিক তথ্য সমেত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এক বা দুই কিস্তিতে জমা দিতে হবে। সময়ে রিটার্ন দাখিল করলে সুদ, জরিমানা এবং অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করাও হবে না।
|
শিক্ষার উন্নয়নে |
শিক্ষার উৎকর্ষকেন্দ্র হিসেবে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর আর্ট এবং কালচারাল হেরিটেজের জন্য ১০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করলেন অর্থমন্ত্রী। একই সঙ্গে কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলকে যে সব সংস্থা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করবে, তাদের জন্য ২০০ কোটি টাকার তহবিল গড়ার কথা ঘোষণা করলেন চিদম্বরম।
|
এফএম বিস্তারে |
বাজেটে দেশের আরও ২৯৪টি শহরে এফএম রেডিও পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। এ জন্য ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে প্রায় ৮৩৯টি নতুন এফএম চ্যানেলের নিলাম করা হবে। যে সব শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষের বেশি, নিলামের পর সেখানে পরিষেবা চালু করবে বেসরকারি এফএম চ্যানেলগুলি।
|
রফতানি বাড়াতে |
এ বার হয়তো সস্তা হবে পায়ের জুতো, চামড়ার ব্যাগ। কারণ, শ্রমপ্রধান ক্ষেত্র হিসেবে চর্মজাত পণ্যের রফতানি বাড়াতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব দিলেন চিদম্বরম। জুতো, ব্যাগ-সহ বিভিন্ন চামড়ার জিনিস তৈরি করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির উপর আমদানি শুল্ক সাড়ে সাত শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হল পাঁচ শতাংশ। বিভিন্ন দামি পাথরের উপরও অনেকখানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিলেন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম।
|
|
নজরে বাজেট। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএএফপি |
|
পাখির চোখ |
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বেচে (বিলগ্নিকরণ) এ বার দ্বিগুণ টাকা তোলাকে পাখির চোখ করছেন অর্থমন্ত্রী। এই অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ সালে তা বাড়িয়ে ৫৫,৮১৪ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে চান তিনি। ইন্ডিয়ান অয়েল, কোল ইন্ডিয়া, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া, নেপকো-র মতো কুড়িটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে এর জন্য ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
|
নজরে শিশুরা |
পর্যাপ্ত খাবার গুদামে মজুত সত্ত্বেও শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগা দেশের লজ্জা। বাজেট বক্তৃতায় বললেন অর্থমন্ত্রী। তাই শিশুদের সুরক্ষা ও শিক্ষা খাতে ব্যয়ের জন্য সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পে ১৭,৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন তিনি।
|
বরাদ্দ দ্বিগুণ |
হইহই করে জারি রইল জেএনএনইউআরএম। এক লাফে দ্বিগুণ হল বরাদ্দ। অর্থমন্ত্রী জানালেন, এই প্রকল্পের হাত ধরে ১৪০০০ বাস যে ভাবে শহুরে বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলেছে তা মাথায় রেখেই এই ‘স্বীকৃতি’। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের জন্য বরাদ্দ দাঁড়াল ১৪৮৭৩ কোটি টাকা। |
|