ফাঁসির রায়ে তপ্ত বাংলাদেশ, নিহত ৪৪
কাত্তরে খুন, ধর্ষণ, লুঠপাট-সহ ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে জামাতে ইসলামির কার্যকরী সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাইদিকে প্রাণদণ্ড দিল ঢাকার আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। তাৎক্ষণিক ভাবে এই খবরে বাংলাদেশ জুড়ে খুশির হাওয়া বয়ে যায়। জয়ধ্বনি করা হয় শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। দেশের প্রায় সর্বত্র মৌলবাদী জামাতে ইসলামি ও তার ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের কর্মীরা ব্যাপক হাঙ্গামা শুরু করে।
পুলিশ, জনতা ও জামাত-শিবিরের সংঘর্ষে নানা জায়গায় ৩ পুলিশ-সহ অন্তত ৪৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রবিবার থেকে দু’দিনের হরতালের ডাক দিয়েছে জামাতে ইসলামি। শুক্রবার দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা নিয়ে সমাবেশের ডাক দিয়েছে শাহবাগ চত্বর। জোট বেঁধে পাড়ায় পাড়ায় জামাত-শিবিরের দুষ্কৃতীদের মোকাবিলারও আহ্বান জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রংপুর, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালি-সহ সর্বত্র সংঘর্ষ ছড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেইল্লা রাজাকারের ফাঁসির হুকুম শুনে উল্লাস ঢাকায়।
বয়স্কদের হাতেও শাহবাগের পতাকা। ছবি: এএফপি।
একাত্তরে পিরোজপুরের ত্রাস দেলোয়ার হোসেন সাইদি ওরফে দেইল্লা রাজাকার জামাতের সর্বোচ্চ নেতা, আগের আমলের সাংসদ। কিন্তু তাঁর দুষ্কর্মে সাক্ষীর অভাব ছিল না। বিশিষ্ট সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের বাবা, পিরোজপুরের তৎকালীন এসডিও ফয়জুর রহমান-সহ কয়েক জন সরকারি কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেছিলেন। এ জন্য ধলেশ্বরী নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে বহু মানুষের চোখের সামনে নিজে হাতে তাঁদের খুন করেছিলেন সাইদি। স্বাধীনতার পরে দেশ ছাড়েন। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পরে ১৯৭৭ সালে দেশে ফিরে সাইদি ধর্মপ্রচারের পেশা নেন। জামাতে ইসলামির সর্বোচ্চ নেতৃত্বেও পৌঁছে যান। এ দিন সকালে কড়া পাহারায় সাইদিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারপতি রায় পড়া শুরু করেন। ২০টি মামলার ৮টিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাঁকে। তার মধ্যে দু’টি মামলায় ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দলের নায়েবে আমির সাইদির মুক্তির দাবিতে এ দিনও সকাল থেকে হরতালের ডাক দিয়েছিল জামাত। কিন্তু কোথাও তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। হরতালকারীদেরও কোথাও সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। সকলের চোখ ছিল টেলিভিশনে। দুপুরে রায় ঘোষণার পরেই উল্লাসে ফেটে পড়েন মানুষ। স্কুল কলেজ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা বেরিয়ে এসে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিতে থাকেন। শাহবাগের তরুণরা আন্দোলনের জয়ধ্বনি দেন। উদাত্ত স্লোগানে বিশাল মিছিল ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পরিক্রমা করে। কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকার নামার পরেই পরিস্থিতি বদলে যায়। উল্লাসের বাংলাদেশ পরিণত হয় সন্ত্রাসের বাংলাদেশে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.