ফেরেনি হুঁশ, শহর জুড়ে জট পাকিয়ে বিদ্যুতের তার
হর জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য বাজার। কিন্তু অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এক কথায় ‘নেই’। আগুন লাগলে কী হবে, সে উত্তরও নেই কারও কাছে।
কাটোয়া এমনিতেই পুরনো শহর, ফলে রাস্তাঘাট সরু, দমকলের গাড়ি ঢোকার মতো রাস্তাও কম। তার উপর শহর জুড়ে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। এ অবস্থায় বাজারগুলি অগ্নি নির্বাপন বিধি যথাযথ ভাবে না মানায় পুরো শহরটাই কার্যত জতুগৃহ বলে মনে করছেন দমকলের কর্তারা।
গোদের উপর বিষফোঁড়া, জতুগৃহ শহরকে বাঁচানোর মতো পরিকাঠামো নেই দমকলেরও। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মী সংখ্যা অপ্রতুল, গাড়ির সংখ্যাও তথৈবচ। এছাড়া ফোমের ট্যাঙ্ক, উচুঁ মই বা হাইড্রোলিক ল্যাডার, নেই কিছুই। ফলে বুধবার শিয়ালদহের সূর্য সেন বাজারের অগ্নিকাণ্ডের পরে কাটোয়াবাসীর প্রশ্ন, এখানে আগুন লাগলে কী হবে?
সার্কাস ময়দানে। —নিজস্ব চিত্র।
দিনকয়েক আগেই শহরের ঠাকুরপুকুর এলাকায় এক তুলোর গুদামে আগুন লেগেছিল। সেই আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয় দমকলকে। পুকুরের জল ব্যবহার করে দীর্ঘক্ষণ পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কিন্তু শহরের ভেতরে কোনও বাজারে আগুন লাগলে? পুরসভা জানায়, শহরের মধ্যের বেসরকারি বাজারগুলির মালিকদের নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হচ্ছে। একটি কমিটি গড়ে বাজারগুলি অগ্নিবিধি মানছে কি না তা দেখা হবে। এছাড়াও আগুন নেভানোর জন্য পরিকাঠামোগত উন্নতি নিয়েও আলোচনা করা হবে। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, ইতিমধ্যেই যথাযথ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে হোটেল বা লজগুলির ট্রেড লাউসেন্স পুর্ননবীকরণ করা হচ্ছে না। শহরের পুর বাজারগুলিতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তারা। পুরপ্রধান শুভ্রা রায় বলেন, “খুব দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কাযর্কর করা হবে।”
পুর কর্তৃপক্ষের আশ্বাস মিললেও বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব গুলিই দাহ্য জিনিসপত্রে ঠাসা, অপরিসর রাস্তার উপরে আগুন জ্বালিয়ে ব্যবসাও চলছে রীতিমতো। দমকলের এক কর্মী বলেন, “অপরিসর রাস্তায় যত্রতত্র ফেরিওয়ালা, হকার, রিক্সা দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে ওই রাস্তা গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সার্কাস ময়দান, গোয়েঙ্কা মোড় কিংবা নজরুল মূর্তির কাছে বিদ্যুতের খুঁটিতে মাকড়সার জালের মতো গিজগিজ করছে বিদ্যুতের তার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সব তার গিয়ে প্রায়ই আগুন জ্বলতে দেখা যায়। মাঝেমাঝে তার ঝুলেও পড়ে।
জতুগৃহ। বাঁ দিকে, কাটোয়ার গোয়েঙ্কা মোড় এলাকায় তোলা ছবি। ডান দিকে, দাহ্য
জিনিসপত্রে ঠাসা বিধান মার্কেট। বৃহস্পতিবার অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কাটোয়া গ্রুপের সহকারি বাস্তুকার লাল্টু মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্পে কাটোয়া শহরের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর উন্নতি চলছে। কাজ শেষ হয়ে গেলে আর সমস্যা থাকবে না।” বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো তার, বিদ্যুতের খুঁটি পাল্টে ফেলা হবে। এ ছাড়া জনবহুল এলাকায় কেবল লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
কিন্তু দমকল, তার কী দশা? কাটোয়া মহকুমার দু’টি পুরসভা, ৫টি ব্লকের কয়েক লক্ষ মানুষের অগ্নি নিরাপত্তা যে দফতরের উপর সেই দমকল কার্যত নিধিরাম সর্দার। একটি বড় ও একটি ছোট ইঞ্জিনই ভরসা তাদের। অতিরিক্ত চালক না থাকায় দু’টি গাড়ি এক সঙ্গেও নিয়ে যেতে পারেন না কর্তারা। কর্মীদের প্রয়োজনীয় পোশাকও নেই। আধিকারিকেরা জানালেন, বিষয়গুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্টও করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক হতাশার সুরে বলেন, “প্রতি বারই বড় অগ্নিকাণ্ডের পরে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তবে কিছুই হয় না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.