‘ডাইন’ সন্দেহে এক বৃদ্ধকে ছুরি ও কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ফালাকাটা ব্লকের খগেনহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম পাহাড় সিংহ শৈব (৬৫)। তাঁকে খুনের অভিযোগে প্রতিবেশী যুবক সুরজ শৈব্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশের জেরার মুখে সুরজের অভিযোগ, তুকতাক করে তাঁর বাড়িতে নানা অশান্তি পাকিয়েছিল ওই বৃদ্ধ। সে জন্যই তাঁকে তিনি খুন করেছেন বলে সুরজের দাবি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি অবশ্য বলেছেন, “ধৃতকে জেরায় জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই দুই পরিবারের মধ্যে নানা কারণে বিবাদ চলছিল। তার জেরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে। ডাইনি সংক্রান্ত অপবাদের বিষয়টি ঠিক নয়।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দিন সুরজ সকালে প্রতিবেশীর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর স্ত্রীকে মারধর শুরু করে। দুই নাতনির চেঁচামেচিতে পাহাড় সিংহ ছুটে স্ত্রীকে বাঁচাতে যান। সুরজ কোমরে রাখা ছুরি নিয়ে পাহাড়বাবুকে কোপাতে থাকে। রক্তাক্ত বৃদ্ধকে টেনে পাশের সুপারি বাগানে নিয়ে যায় ওই যুবক। সেখানে পড়ে থাকা কোদাল দিয়ে মাথায় বেশ কয়েকটি আঘাত করে বলে অভিযোগ। পরে পাহাড়বাবুর দেহের উপরে উঠে কিছুক্ষণ নাচানাচি করে সুরজ পালিয়ে যান। পরে মঙ্গলবার গ্রামের পাশে এক চা বাগানের ঝোপে লুকিয়ে থাকা সুরজকে খুঁজে বার করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
ধনীরামপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মুক্তা দত্ত বলেন, “যত দূর জানি, আগেও ডাইন অপবাদ দিয়ে ওই বৃদ্ধকে মারধর করেছিল যুবকটি। এ দিন ডাইন অপবাদ দিয়ে খুন করেছে বলে শুনেছি।” মৃতের স্ত্রী রেনতি দেবী জানান, এক বছর আগে অসুখে তাঁদের একমাত্র ছেলে মারা যায়। তার স্ত্রী দুই কন্যাসন্তানকে রেখে অন্যত্র চলে যায়। রেনতি দেবী বলেন, “স্বামী ঝাড়ফুঁক করতেন। হাটে শুয়োর বিক্রি করতেন। কারও অনিষ্ট করেননি। অথচ চোখের সামনে ওঁকে কুপিয়ে মারা হল।” |