নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য সরকারের কাছে তফসিলি জাতি-উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র জন্য শংসাপত্র জারির প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানাল কংগ্রেস। একই সঙ্গে তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে তিন দফায় পঞ্চায়েত ভোট হওয়া উচিত রাজ্যে।
তফসিলি জাতি, উপজাতি (এসসি, এসটি) এবং ওবিসি-র জন্য পঞ্চায়েতে প্রায় ৫০% আসন সংরক্ষিত। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রার্থী হতে ইচ্ছুক অনেকেই ওই আসনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সমস্যায় পড়ছেন। বার বার আবেদন করেও তাঁরা এসসি, এসটি বা ওবিসি শংসাপত্র পাচ্ছেন না। অনগ্রসর সম্প্রদায় উন্নয়নমন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল। বাকিদের মধ্যে ছিলেন অসিত মাল, নেপাল মাহাতো, মইনুল হক। পরে মানসবাবু বলেন, “উপেনবাবু অনেক চেষ্টা করছেন, প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু প্রথাগত প্রশাসনিক পদ্ধতির জটিলতায় খুব অসুবিধা হচ্ছে শংসাপত্র পেতে।” মানসবাবুর আরও বক্তব্য, “এটা তো শুধু কংগ্রেসের ব্যাপার নয়। সব রাজনৈতিক দলের ভাবার বিষয়। তাঁদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সাংবিধানিক দিক দিয়ে গর্হিত অপরাধ। দুর্ভাগ্যজনক!”
এরই পাশাপাশি, মানসবাবু এ দিন বলেন, পঞ্চায়েত ভোটে মোট ৬৬ হাজার বুথ। এর মধ্যে ৫৯ হাজার গ্রামীণ বুথ। এ দিকে রাজ্যে পুলিশের সংখ্যা ৭৬ হাজার। কলকাতা ও জেলা মিলিয়ে সশস্ত্র পুলিশ মাত্র ৪০ হাজার। এক দিনে ভোট হলে কী করে সব বুথে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ দিতে পারবে? তাঁর কথায়, “শাসক গোষ্ঠীর নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে! আমাদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। তার মধ্যে আবার এই সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এটা অবশ্যই তিন দফায় হওয়া উচিত। তার আগে সমস্ত স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করতে হবে।” সদ্য কলকাতা সফরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দের কাছেও একই যুক্তি পেশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
উপেনবাবুর সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে তাঁরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন বলে মানসবাবু জানিয়েছেন। যেমন
প্রথমত, প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের হলফনামা এসসি, এসটি বা ওবিসি শংসাপত্রের জন্য লাগে। এর সঙ্গে নোটারি পাবলিককে যুক্ত করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে, যাতে জরুরি ভিত্তিতে শিবির করে ৭ দিনের মধ্যে শংসাপত্র দেওয়া যায়।
তৃতীয়ত, শংসাপত্রের জন্য প্রার্থীকে ১০ জনের সই জোগাড় করতে হয়। এই প্রক্রিয়া সরল করা দরকার।
চতুর্থত, বিডিও অফিসে একাধিক ব্লকের কাজ এক জন করে অফিসারকে সামলাতে হয়। চাপ কমাতে অস্থায়ী কর্মী নিতে হবে। |