ভিড়ে ঠাসা বাস থেকে নামার সময় কন্ডাক্টর ভুল করে অন্য লোকের একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছিলেন। বাসস্টপেই অচেনা লোকের সেই ব্যাগ খুলতেই চমকে গিয়েছিলেন খেতমজুর দম্পতি। জামা-কাপড়ের সঙ্গে সেই ব্যাগে ছিল একটি সোনার হার ও দুল। আজকের বাজারে ওই গয়নার দামও নেহাত কম নয়। সংসারে দুঃখের বারামাস্যা থাকলেও গয়না দেখে টলে যায়নি ওই দম্পতির মন। সটান থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে ওই ব্যাগ জমা দিয়ে আসেন তাঁরা। পরে ব্যাগের মালিক থানায় অভিযোগ জানাতে এসে নিজের ব্যাগ ফিরে পেলেন। সোমবার রাতে বাঁকুড়ার জয়পুর থানার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় খেত মজুর অমর লোহার ও তাঁর স্ত্রী মীরা লোহার সোমবার সন্ধ্যায় কোতুলপুর থেকে জয়পুর ফিরছিলেন। জয়পুরের সিনেমাতলায় তাঁদের বাড়ি। ওই বাসেই শ্বশুরবাড়ি জয়পুরের রাজগ্রাম থেকে ওন্দার খামারবেড়িয়ায় বাপেরবাড়ি যাচ্ছিলেন শ্রাবণী ঘোরুই। অমরবাবুর কথায়, “বাসে বেশ ভিড় ছিল। জয়পুরে আমরা নামার পর বাসের খালাসি ভুল করে একটি ব্যাগ আমাদের হাতে দিয়ে দেয়। ব্যাগটি আমাদের নয় বলতে যাওয়ার আগেই বাসটি ছেড়ে দেয়। সেখানেই ব্যাগটি খুলি। জামাকাপড়ের মধ্যে সোনার কিছু গয়না ছিল। স্ত্রী ও আমি সঙ্গে সঙ্গেই ঠিক করি, যাঁর ব্যাগ তাঁকে ফেরত দিতে হবে। থানায় গিয়ে পুলিশকে সব বলে ব্যাগটি জমা দিয়ে আসি।” এ দিকে বাসের মধ্যে ভিড় পাতলা হলে শ্রাবণীদেবী দেখেন, ব্যাগ নেই। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর স্বামীকে মোবাইলে ব্যাগ হারানোর খবর দেন। তিনি জয়পুর থানায় ব্যাগ হারানোর অভিযোগ জানাতে গিয়ে দেখেন আগেই ব্যাগটি সেখানে জমা করা হয়েছে।
ব্যাগ ফেরত পেয়ে শ্রাবনীদেবী বলেন, “ব্যাগটা ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। আজকালকার দিনে এমন মানুষও রয়েছে ভাবা যায় না। ওই দম্পতিকে অনেক ধন্যবাদ।” অমরবাবুর পাল্টা জবাব, “ব্যাগের মালিক ফেরত পেয়েছেন, এতেই আমরা খুশি।” পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যাগে জামা কাপড়ের সঙ্গে সোনার হার ও কানের দুল ছিলয় যার বর্তমান বাজার দর প্রায় ৪০ হাজার টাকা। মঙ্গলবার উপযুক্ত প্রমাণ দেখে ব্যাগের আসল মালিকের হাতে ব্যাগটি তুলে দেওয়া হয়েছে। |