রাজ্যে বিপিএল তালিকাভুক্ত নন, এমন দরিদ্র মানুষের জন্য ‘অধিকার’ প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার বকখালির সভায় মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণা করেছেন। অনগ্রসর শ্রেণি ছাড়াও বিপিএল তালিকাভুক্ত নন এমন দরিদ্র মানুষের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় পরিবার-পিছু বাড়ি তৈরির জন্য সাড়ে ৪৮ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই রাজ্যে কারও মাথার উপরে ছাদ থাকবে না, এমনটা হবে না।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৯০০০টি দুঃস্থ পরিবারকে এই সাহায্য দেওয়া হবে। পরে তা রাজ্যের সর্বত্র কার্যকর হবে। বিধানসভায় ক্যাবিনেট পর্যায়ে তিনি ইতিমধ্যেই প্রকল্পের রূপরেখা পেশ করেছেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। |
বাম আমলে রাজ্যে ‘আশ্রয়’ প্রকল্প চালু হয়। তার আওতায় বিপিএল তালিকাভুক্ত নয়, এমন দুঃস্থ পরিবারকে বাড়ি বানানোর আর্থিক সাহায্য দেওয়া হত। তা হলে ‘অধিকার’ প্রকল্প নতুন কিসে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা জানান, ‘আশ্রয়’ প্রকল্পের টাকা দিত রাজ্য আবাসন পর্ষদ। ‘অধিকার’ প্রকল্পটিও ‘আশ্রয়’ প্রকল্পের ধাঁচে করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে প্রথম কিস্তির টাকা বিভিন্ন জেলাতে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দেবে ‘স্পেশাল বিআরজিএফ’ (অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিল)। কেন্দ্র সরকার রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে এই টাকা দিচ্ছে।
দিঘা-শঙ্করপুর বা হলদিয়ার মডেলেই গঙ্গাসাগর-ফ্রেজারগঞ্জ-বকখালিকে নিয়ে একটি পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গড়া হবে বলে এ দিন ঘোষণা করেন মমতা। |
মমতা
বকখালিতে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার। ছবি: সুমন বল্লভ। |
আপামর বাঙালির প্রিয় ইলিশ মাছ নিয়ে রাজ্যে একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরির কথাও জানিয়েছেন তিনি। কী হবে ওই গবেষণা কেন্দ্রে? মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, “ছোট ছোট ইলিশ কে কী ভাবে বড় করা যায়, তা নিয়ে কাজ হবে।” ফ্রেজারগঞ্জে একটি নতুন কলেজ তৈরিরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। রাজ্যে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার উল্লেখ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য মঞ্চ থেকে হাতজোড় করে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
৪০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত ভাষণে মমতা এদিন রাজনীতির কথা কিছুই বলেননি। তাঁর মতে, “আমি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেই মনে করি না। মনে করি, আমি আপনাদের পাশের বাড়ির মেয়ে।” |