বিশ্বভারতীর উপাসনা ও উৎসব অনুষ্ঠানগুলিতে অধ্যাপক, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একটা অংশের সামিল না হওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। বিশ্বভারতীর ওই অংশের অনুপস্থিতি একেবারেই অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতার স্বপ্ন ও আদর্শকে বাস্তব রূপ দিতে এই ধরনের মানসিকতা দ্রুত দূর করার আবেদনও জানান তিনি। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের আম্রকুঞ্জে ‘রবীন্দ্রনাথের পাঠভবন: পরীক্ষামূলক শিক্ষাব্যবস্থা’ শীর্ষক তিন দিনের একটি জাতীয় আলোচনাসভায় যোগ দিয়ে এই কথা বলেন উপাচার্য।
অনুষ্ঠানের প্রথম দিনই সুশান্তবাবু বলেন, “সাম্প্রতিক কালে দেখতে পাচ্ছি, বিশ্বভারতীর শিক্ষক ও কর্মীদের একটা অংশ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী উৎসব-অনুষ্ঠানগুলিতেই হাজির থাকছেন না। বিষয়টি শুধু দৃষ্টিকটুই নয়, প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও খানিকটা অস্বস্তিকর।” তিনি কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ওই শিক্ষকেরাই যদি অনুষ্ঠানগুলিতে না আসেন, তা হলে পড়ুয়াদের মনে ওই ঘটনার বিরূপ প্রভাব পড়বে। উপাচার্যের কথার সূত্র ধরে ওই অধ্যাপক ও কর্মীদের একহাত নেন মঞ্চে হাজির বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী, শিল্পী ও অন্যান্য শিক্ষানুরাগীরাও। এমন গরহাজিরার ‘সংস্কৃতি’ নিয়ে তাঁরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর আগে উপাচার্য থাকার সময় সুজিতকুমার বসুও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাৎসরিক স্মরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মীদের অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সুশান্তবাবুর এই উষ্মা প্রকাশ, ইঙ্গিত দিচ্ছে সময় এগোলেও বিশ্বভারতীর ওই অংশের মানসিকতায় বদল আসেনি।
গত ২২-২৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের ওই আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষানুরাগীরা। বিশিষ্টদের মধ্যে ছিলেন চিত্রকর রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক গণপতি সুব্বাইয়া, বিশিষ্ট রবীন্দ্রানুরাগী মার্টিন ক্যাম্পচেন, পাঠভবনের অধ্যক্ষ বোধিরূপা সিংহ প্রমুখ। আলোচনা ছাড়াও ছিল নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। শেষদিন পাঠভবনের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের উদ্যোগে লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটক মঞ্চস্থ হয়। |