দু’টি পৃথক খুনের মামলায় সাজা হল ১৪ জনের। মঙ্গলবার দু’টি মামলারই সাজা ঘোষণা হয়। একটিতে জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে পড়শি এক প্রৌঢ়কে খুনের দায়ে ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন রামপুরহাট ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক কুমকুম সিংহ। অন্যটিতে অতিরিক্ত পণের জন্য বধূ নির্যাতন ও খুনের দায়ে স্বামী, শাশুড়ি-সহ ৬ জনের ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন রামপুরহাট ফাস্ট ট্র্যাক প্রথম আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমার।
প্রথম মামলা প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী নিমাই মুখোপাধ্যায় জানান, ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর দুপুরে মুরারই থানার রুপরামপুর গ্রামের ভিতরে ঠাকুরপুকুর পাড়ে একটি চালাঘর বানানোর জন্য খুঁটি পুঁতছিলেন মোমিন শেখ নামে গ্রামের এক প্রৌঢ়। সেই সময় গ্রামেরই বেশ কয়েকজন বাসিন্দা তাঁকে খুঁটি বসাতে বাধা দেন এবং গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ করলে বাধাদানকারীরা লাঠি, শাবল নিয়ে মোমিন শেখের উপরে চড়াও হয়। মারধর করা হয় তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও আত্মীয়দের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। ওই দিনই মুরারই থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন ছেলে কেতাবুল শেখ। মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ১৮ জনের মধ্যে ৮ জনকে সোমবার বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বাকিদের বেকসুর খালাস দিয়ে দেন। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা করা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’বছর জেল ও প্রত্যেককে ৩ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। সব সাজা এক সঙ্গে চলবে বলে জানান আইনজীবী।
অন্য মামলা প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী উৎপল মুখোপাধ্যায় জানান, ২০১১ সালের ১৫ মার্চ রামপুরহাটের নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা গফ্ফর শেখের মেয়ে রোজিনার বিয়ে হয়েছিল নারায়ণপুরের বাসিন্দা ফারহাদ শেখের সঙ্গে। ওই বছর ২১ এপ্রিল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে গফ্ফর শেখ দেখেন বাড়ির বারান্দায় মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে, ঘরে কেউ নেই। দেহ সৎকারের পরে ২২ এপ্রিল জামাই, শাশুড়ি-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ দিন দশ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি, বধূ নির্যাতনের জন্য তিন বছর কারাদণ্ড ও ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা, পণ বিরোধী আইনের ধারায় প্রত্যেকের আরও চার বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়েছে। সব সাজা এক সঙ্গে চলবে। |