ব্যান্ডেল-কাটোয়া ডবল লাইনের কাজ ২০১৫ সালের মধ্যে শেষ করা রেলের লক্ষ্য। আর তারই অঙ্গ হিসেবে মঙ্গলবার রেল বাজেটে ধাত্রীগ্রাম থেকে নবদ্বীপ এবং পূর্বস্থলী থেকে নবদ্বীপ পর্যন্ত ডবল লাইন করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হল। একই সঙ্গে, চলতি বছরে দাঁইহাট থেকে পাটুলি পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে রেলমন্ত্রী পবন বনশল আশা করেছেন।
প্রথম বার রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যান্ডেল-কাটোয়া ৯২ কিলোমিটার রেলপথ ডবল লাইন করার জন্য বাজেট বরাদ্দ করেন। কিন্তু তার পরে প্রকল্পটি ‘খুঁড়িয়ে’ চলছিল। রেল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান-কাটোয়া লাইনের গেজ পরিবর্তনের শিলান্যাস করতে এই পথ ধরেই কাটোয়া যান তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। তিনি ফিরে যাওয়ার পরে পরবর্তী রেল বাজেটে ব্যান্ডেল থেকে জিরাট পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ শেষ করার উদ্যোগী হয়। |
চলছে কাটোয়া-ব্যান্ডেল ডবল লাইন পাতার কাজ। —নিজস্ব চিত্র। |
রেল সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় বার রেলমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকটি পর্যায় ভাগ করে ডবল লাইনের জন্য টাকা বরাদ্দ করেন। মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কাটোয়া থেকে পাটুলি ডবল লাইনের জন্য টাকা বরাদ্দ করেন। এখন সেই কাজ শেষ পর্যায়ে। এ বার বাজেট পেশের সময়ে রেলমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, চলতি বছরেই দাঁইহাট থেকে পাটুলি ১১ কিলোমিটার পথ ডবল লাইন করার কাজ হয়ে যাবে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, “ব্যান্ডেল থেকে কালনা পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ প্রায় শেষ। মার্চে ওই লাইন চালু হয়ে যাবে।”
এ বার নবদ্বীপ থেকে ধাত্রীগ্রাম পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার এবং পূর্বস্থলী থেকে নবদ্বীপ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ডবল লাইন করার জন্য রেলমন্ত্রী বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছেন। ফলে, ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইন ডবল করার ব্যাপারে আরও কিছুটা এগোল রেল। এই কাজ হয়ে গেলে বর্ধমান, নদিয়া, হুগলির একাংশ তো বটেই, মুর্শিদাবাদ-বীরভূমের মানুষেরও কলকাতা যেতে সময় কম লাগবে। ওই লাইনের এক ট্রেনচালকের দাবি, “কাটোয়া থেকে হাওড়া যেতে গড়ে চার ঘণ্টা লাগে। ডবল লাইন হয়ে গেলে অন্তত আধ ঘণ্টা সময় কম লাগবে।”
হাওড়া-কাটোয়া সাবার্বান প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবু মুখোপাধ্যায় বলেন, “ডবল লাইন হলে এলাকার অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।” পূর্বস্থলীর রতন ঘোষ, মুর্শিদাবাদের সালারের নৌশাদ শেখরা বলেন, “সময় মতো বাজারে সব্জি নিয়ে যেতে পারি না বলে আমাদের লোকসান হয়। ডবল লাইন হলে আশা করি তাড়াতাড়ি পৌঁছতে পারব।” আশায় রয়েছেন পূর্বস্থলীর জালুইডাঙা গ্রামের বাসিন্দারাও। তাঁদের আশা, ডবল লাইনের কাজ হলে ভাগীরথীর ভাঙন রোধ করতেই হবে রেলকে। ওই গ্রাম থেকে রেললাইনের দূরত্ব মেরেকেটে ১০০ মিটার। তার কিছু দূর দিয়ে বয়ে চলেছে ভাগীরথী। লাইন বাঁচাতে রেল কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এলে বেঁচে যাবে জালুইডাঙাও। ডবল লাইন ঘিরে এখন এমনই নানা আশা। |