সব আর্থিক সংস্থায় সিসিটিভি লাগাতে আর্জি বেনাচিতিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বছরের পর বছর বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বেনাচিতি বাজারে সিসিটিভি লাগানোর ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হয়নি কেউই। একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থায় ভয়াবহ ডাকাতির পরে এ বার নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট থেকে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত সিসিটিভি লাগানোর বিষয়টি সেরে ফেলার আর্জি জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, বেনাচিতির স্টিল মার্কেট থেকে ভিড়িঙ্গির মধ্যে ২২টি এই রকম ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থা রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্ম করেও অনেক ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা ভিড়ে মিশে পার পেয়ে গিয়েছে। ২০০৯ সালে ভিড়িঙ্গি মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়। পরের বছর নাচন রোডেও আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশের তরফে এর পরে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি লাগানোর উপরে জোর দেওয়া হয়। ২০১২ সালে বণিক সংগঠন ও বিভিন্ন সংস্থার কর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করে পুলিশ। সিসিটিভি লাগানোর বিষয়ে সব পক্ষই এক মত হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা আর কার্যকরী হয়নি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বেনাচিতির একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থায় দিনের আলোয় বহু মূল্যের গয়না লুঠ করে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। খোয়া যায় টাকাও। লুঠ হওয়া জিনিসপত্রের কিছু অংশ ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বেনাচিতির মতো জনবহুল এলাকায় দুষ্কৃতীদের রমরমা ঠেকাতে ফের সিসিটিভি বসানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই সংস্থায় লুঠ করে যাওয়ার সময়ে সামনে থাকা সিসিটিভি-র কেন্দ্রীয় রেকর্ডারটি দুষ্কৃতীরা নিয়ে পালায়। অথচ সেটি রাখার কথা কোনও গোপন জায়গায়। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, মাসে এক বার করে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক করে পুলিশ। কিন্তু ওই বেসরকারি সংস্থা কোনও দিন পুলিশের ডাকে সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই সিসিটিভি লাগানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করতে একটি বৈঠক হবে। ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শুধু ভিতরে নয়, প্রবেশপথেও সিসিটিভি লাগানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এডিসিপি (পূর্ব) জানান, সিসিটিভি-র কেন্দ্রীয় রেকর্ডারটি রাখতে হবে সুরক্ষিত জায়গায়। শুধু তাই নয়। রেকর্ডারটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে তুললেই জোরালো শব্দে অ্যালার্ম বেজে ওঠার বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। সম্প্রতি ডাকাতি হয়ে যাওয়া আর্থিক সংস্থাটিও এ বার উৎসাহ দেখিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। এডিসিপি (পূর্ব) আরও জানান, ওই আর্থিক সংস্থায় যে ভাবে এক জন বন্দুকধারী প্রহরীর উপরে ভরসা করে অত মূল্যবান জিনিস রাখা হয়েছিল, তা-ও হাস্যকর। এখন থেকে জমা সোনার পরিমাণ কত, তা পুলিশকে জানাতে হবে। এডিসিপি (পূর্ব) বলেন, “সে ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকবে পুলিশ।” বেনাচিতির বণিক সংগঠনের পক্ষে রমাপ্রসাদ ঘোষাল বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের উদ্যোগের পক্ষে। প্রয়োজনে আমাদের দিক থেকে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।” |