বিয়ের আয়োজন তখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিমন্ত্রিত অতিথিরাও একে একে আসতে শুরু করেছেন। ছাঁদনাতলার সামনে পুরোহিত বসে বিয়ের জোগাড় করছেন। অতিথিদের জন্য রান্নাবান্নাও চলছে জোরকদমে। কনে সাজা দেখতে বাসরঘরে মহিলাদের উপচে পড়া ভিড়। বর আসার অপেক্ষায় সবাই। ঠিক সেই সময় একদল লোক হন্তদন্ত হয়ে বিয়ে বাড়িতে ঢুকলেন। তাঁদের পিছনেই একদল পুলিশকর্মী। ডাক পড়ল কনের বাবা মায়ের। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই বুঝে গেলেন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে বিয়ের আসরে হাজির হয়েছেন স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পিরোজপুর এলাকায়।
এ দিন রাত ৮টা নাগাদ পেশায় রিকশাচলক কার্তিক সরকারের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে তথা নবম শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকার সঙ্গে স্থানীয় খলসি গ্রামের বাসিন্দা প্লাইউড কারখানার কর্মী হরকুমার মল্লিকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে এদিন বিকালে ওই খবর জানতে পেরে কুট্টিতলা হিউম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। উত্তর দিনাজপুর জেলা সমাজকল্যাণ দফতর, জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন দফতরের আধিকারিক ও কর্ণজোড়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কার্তিকবাবুর বাড়িতে যায়। উদয়পুর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী ওই কিশোরীকে পুলিশ উদ্ধার করে রায়গঞ্জের সুর্যোদয় মূক ও বধির হোম কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন। সোসাইটির সম্পাদক দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নাবালিকার বিয়ে হতে চলেছে খবর পেয়েই সমাজকল্যাণ দফতর ও পুলিশের দ্বারস্থ হই। সবার সহযোগিতায় বিয়ে আটকানো সম্ভব হল।”
কার্তিকবাবুদের অভাবের সংসার ! তাঁর স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন ! তাঁদের ছোট মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এদিন তাঁদের বড় মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। ২০ বছর বয়সী পাত্র হরকুমারের বাবা নারায়ণবাবু কারখানায় কাজ করেন। কার্তিকবাবু বলেন, “রিকশা চালিয়ে দুই মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালাতে হিমশিম খাই। তাই বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলাম। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যায় না তা আগে জানতাম না। তাই ভুল করে মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলাম।” হোমে বসে ওই নাবালিকা জানায়, সে পড়াশুনা করতে চায়। তবে বাবা মায়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে সে বিয়েতে অমত প্রকাশ করেনি। মা রিনাদেবী বলেন, “১৮ বছর হলে মেয়ের বিয়ে দেব।”
তালা ভেঙে লুঠ। দরজার তালা ভেঙে একটি বাড়ি থেকে নগদ ও গয়না মিলিয়ে ২ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাতে ইসলামপুর থানার অজিতবাস কলোনিতে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই বাড়ির মালিকের নাম নিত্যগোপল দেবনাথ। পেশায় কৃষক নিত্যবাবুর পরিবারের কেউ ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা সকলে লাগোয়া দারিভিট এলাকায় আরেকটি বাড়িতে যান। নিত্যবাবু জানান, সম্প্রতি একটি জমি বিক্রি করে টাকা পেয়েছিলাম। সেখান থেকে বাক্সে ১ লক্ষ টাকা রাখা ছিল। সঙ্গে সোনার গয়নাও ছিল। ইসলামপুর থানার আইসি মকসুদুর রহমান বলেন, “অভিযোগ জমা পড়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।” |