নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ও’পারের প্রত্যয়ী আন্দোলনের উপমা এ বার এসে পড়ল এ’পারেও। প্রতিবেশী দেশের উত্তাল রাজপথ থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলল এ রাজ্যের বামেরা। শাহবাগ আন্দোলনের সহমর্মিতায় প্রথম মিছিলও দেখল কলকাতার রাজপথ।
মৌলবাদের হুমকি উপেক্ষা করে ঢাকার তরুণ প্রজন্ম যে ভাবে পথে নেমে আন্দোলনে সামিল হয়েছে, দলের কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য সেই সাম্প্রতিক উদাহরণ ব্যবহার করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। ও’পারের বাংলার সঙ্গে এ’পারের বাংলার ইতিহাস এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষিতের ফারাক উল্লেখ করেও আক্রমণের মুখে দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে রুখে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত হিসাবে শাহবাগ আন্দোলনের দিকে তাকানোর পরামর্শ দেন। জনগণকে সংগঠিত করার জন্য দলীয় কর্মীদের প্রতি চেনা আহ্বানের সঙ্গেই জুড়ছেন বাংলাদেশের পথ-প্রদর্শক আন্দোলনকে।
আলিমুদ্দিনে সোমবার একটি স্মরণসভায় বিমানবাবুর বক্তব্য, “কোনও দিন চক্রান্তকারীরা ইতিহাস তৈরি করে না। ইতিহাস গড়ে সংগ্রামী জনগণ। ওই তো আমাদের পাশের দেশ বাংলাদেশে মৌলবাদী হামলার বিরুদ্ধে জনগণ নেমেছে। শাহবাগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বিরাট অংশের তরুণ প্রজন্ম। মৌলবাদীদের ধর্মঘটের ডাক গত কাল (রবিবার) জনগণই পথে নেমে পর্যুদস্ত করেছে! বাংলাদেশের জনগণ নতুন ইতিহাস তৈরি করবে।” একই সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, “ওই বাংলার সঙ্গে পশ্চিমবাংলার ইতিহাস একটু ভিন্ন ধরনের। কিন্তু এখানেও অত্যাচার-আক্রমণ যতই হোক, যতই বিভ্রান্তিকর প্রচার হোক, মানুষ প্রতিবাদ করবেই। তার জন্য দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে জনগণকে সংগঠিত করতে হবে।”
এর অব্যবহিত আগেই এ দিন রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শ্রদ্ধানন্দ পার্ক পর্যন্ত শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করে এসইউসি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলাদেশের মৌলবাদ-বিরোধী আন্দোলনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ দেশেও বিভিন্ন ধর্মীয় মৌলবাদ শাসক এবং তথাকথিত বিরোধী দলগুলির মদতে ক্রিয়াশীল। তার বিরুদ্ধে এখানেও গড়ে উঠুক গণ আন্দোলন।”
প্রসঙ্গত, স্মরণসভার অবসরে এ দিন ফের আত্মসমালোচনার সুরও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। বিমানবাবু বলেছেন, “এখন যাঁরা পার্টি করতে আসেন, বেশির ভাগই পার্টিকে দেওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু একটা অংশ আছে, যাদের পার্টির কাছে কিছু নেওয়ার ব্যাপার আছে। সংখ্যায় কম হতে পারে। কিন্তু ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরে এটা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে, বলা যাচ্ছে না। ৩৪ বছর সরকারে থাকার আগেও ছিল। তার পরেও নেই, বলতে পারছি না।”
|