নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মহাকরণ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাদের প্রতি মৌখিক নির্দেশ ছিল আগেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছে অনুসারে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। মহাকরণের অন্দরে দিব্যি চলছিল বিভিন্ন দফতরের মৌরসিপাট্টা। বাধ্য হয়ে এ বার জারি করতে হল সরকারি বিজ্ঞপ্তি।
বিজ্ঞপ্তিতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে মহাকরণ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এবং ‘শেষ কথা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতিসাপেক্ষেই এই নির্দেশ। “মহাকরণে এমনিতেই জায়গার অভাব। সে জন্য দফতরগুলোকে উঠে যেতে বলা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এক বার ঘোষণা করেছিলেন। তার পরেও ওরা সরেনি। বাধ্য হয়ে বিজ্ঞপ্তি দিতে হল।” জানাচ্ছেন এক পূর্ত-কর্তা। সূত্রের ইঙ্গিত, এই স্থানবদলের পরে পরিবহণ দফতরের উপদেষ্টা তথা মমতার ‘সেকেন্ড কমান্ড ইন চিফ’ মুকুল রায়ের মহাকরণে বসার
জায়গা হবে।
বস্তুতই রাজ্য প্রশাসনের সদরে স্থানাভাব বহু বছরের সমস্যা। যে কারণে বাম আমলে স্বাস্থ্য, পঞ্চায়েত, শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্যের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আরও কয়েকটিকে মহাকরণ থেকে অন্যত্র সরাতে চেয়েছিলেন বামফ্রন্ট জমানার দুই মুখ্যমন্ত্রী। নানা বাধায় তা হয়ে ওঠেনি।
|
নয়া ঠিকানা |
দফতর |
কোথায় যাচ্ছে |
বন |
অরণ্য ভবন |
পরিবেশ |
পৌর ভবন |
শিশু |
পৌর ভবন |
সমাজকল্যাণ |
পৌর ভবন |
প্রাণিসম্পদ |
গোসম্পদ ভবন |
|
প্রশাসনিক সূত্রের খবর: মমতা ক্ষমতায় এসে মহাকরণ ‘ফাঁকা’ করতে উদ্যোগী হওয়া সত্ত্বেও গত প্রায় দু’বছরে একটি দফতরকেও সরানো যায়নি। এ বার তাই কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। কী রকম?
মহাকরণ সূত্রের খবর: বন দফতরের অফিস অনেক আগে সল্টলেকের অরণ্য ভবনে উঠে যাওয়া সত্ত্বেও দফতরের কিছু কর্তা মহাকরণেই বসতেন। এ বার নির্দেশ, পুরো দফতরকে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে মহাকরণের পাট গুটিয়ে অরণ্য ভবনে চলে যেতে হবে। পরিবেশ, শিশু এবং সমাজকল্যাণ দফতরের জন্য সময়সীমা ধার্য হয়েছে ৩০ এপ্রিল। তার মধ্যে তিনটিকেই সল্টলেকের পৌর ভবনে সরতে হবে। পরিবেশ যাবে ওই বাড়ির চারতলায়। অন্য দু’টি পাঁচতলায়। প্রাণিসম্পদকে পাঠানো হচ্ছে সল্টলেকের গোসম্পদ ভবনে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে তাকে মহাকরণ ছাড়তে হবে।
পাশাপাশি মহাকরণ ও জেশপ বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার নানা অফিসকেও পাততাড়ি গোটাতে বলা হয়েছে। সবগুলোকে একত্রিত করে জায়গা দেওয়া হচ্ছে কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটে, খনি ও খনিজ অধিকর্তার অফিসে। সময়সীমা ৩১ মার্চ। আবার খনি ও খনিজ অধিকর্তার অফিসটি কাউন্সিল হাউস স্ট্রিট থেকে সরানো হচ্ছে ক্যামাক স্ট্রিটের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের অফিসে। একই ভাবে ক্যামাক স্ট্রিট থেকে পূর্ত (সড়ক) এবং পূর্ত-প্রকল্প রূপায়ণ কেন্দ্রের অফিস স্থানান্তরিত হবে এইচআরবিসি ভবনে। আইজি (রেল)-এর অফিসটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সার্কিট হাউস থেকে সরে ঠাঁই পাচ্ছে নেতাজি সুভাষ ভবনে। ৩১ মার্চ থেকে আইজি (রেল) নতুন অফিসে বসবেন।
কিন্তু সল্টলেকে পূর্ত ভবন তো তৈরি হয়েছে অনেক দিন হয়ে গেল! তার পরেও পূর্ত দফতর কেন মহাকরণেই থেকে যাচ্ছে? প্রশাসনের একাংশে সে প্রশ্ন উঠলেও সদুত্তর মেলেনি। |