দোলা-পূর্ণেন্দুকে বিঁধে পদত্যাগ শ্রমিক নেতার
শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং আইএনটিটিইউসি-র সভানেত্রী দোলা সেনের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় তথা রাজ্য কোর কমিটির এক নেতা। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েও কাজ না হওয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
সোমবার দুর্গাপুরে সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় নামে খনি এলাকার এই প্রবীণ নেতা। ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ দিয়ে অভিযোগ করেন, পূর্ণেন্দু ও দোলা যে শুধু মালিকপক্ষের ‘দালাল’ তা নয়, জেলায় জেলায় সংগঠনের সভাপতিদের ‘তোলা আদায়ের এজেন্টে’ পরিণত করেছেন তাঁরা। সংগঠনের বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
সোমনাথবাবুর কথায়, “সংগঠনের নাম করে শুধু তোলাবাজি চলছে।” এ প্রসঙ্গে দোলা বলেন, “আমি যা বলার, সংগঠনের ভিতরে বলি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলি না।” পূর্ণেন্দু বসুকে ফোন করা হলেও তিনি ‘ব্যস্ততা’র কারণে কথা বলেননি। প্রভাতবাবু বলেন, “এ নিয়ে যা বলার, দল বলবে।” আইএনটিটিইউসি-র সর্বভারতীয় সভাপতি তথা পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “সংগঠনের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে হলে তথ্যপ্রমাণ-সহ তা ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে পেশ করতে হয়। উনি তা না করে সংবাদপত্রের আশ্রয় নিতে গেলেন কেন?”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণেও ক্ষুব্ধ সোমনাথবাবু। তাঁর দাবি, সিপিআই (এমএল) করার সূত্রে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে তিনি তৃণমূলের পাশে ছিলেন। ২০০৯ সালে মমতা তাঁকে আইএনটিটিইউসি-র কোর কমিটির সদস্য মনোনীত করেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি যে ভাবে শ্রমিক শ্রেণির ধর্মঘটের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন, তাতে তিনি মর্মাহত। তাঁর মতে, ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় মমতার দলের কর্মীরা যে ভাবে ‘কান কাটছেন, চোখ কেড়ে নিচ্ছেন, তা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসেরই নামান্তর।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি মমতার উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছিলেন সোমনাথবাবু। তাতে এই সব প্রসঙ্গ না তুললেও সংগঠনেরই একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে এবং তাঁকে কোর কমিটির বৈঠকে ডাকা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, “সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছি। পানাগড়ে মাটি উৎসবে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি তুলে দিয়েছি মুকুল রায়ের হাতে। কিন্তু কারও হেলদোল নেই।” মুকুলবাবু অবশ্য বলেন, “এই ধরনের চিঠি আমায় কেউ দিয়েছে বলে মনে পড়ছে না।” সুব্রতবাবুর মন্তব্য, “পদত্যাগ তো করেই দিয়েছেন। উনি নিজেকে অপরিহার্য না ভাবলেই পারতেন।”
সোমনাথবাবুর ‘রাজনৈতিক আনুগত্য’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, আসল নাম অরুণকুমার মুখোপাধ্যায় হলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি অন্য নাম ব্যবহার করেন। এক সময়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের ছত্রচ্ছায়ায় ছিলেন। পরে সিপিআই (এমএল)-এ যোগ দেন। উখড়া পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখলের জন্য কখনও কংগ্রেস, কখনও সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের হাত ধরেছিলেন। বছর ছয়েক আগে সিপিআই প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। পরে দোলা-পূর্ণেন্দুদের সঙ্গে আইএনটিটিইউসি-তে ঢোকেন। অথচ উখড়ায় সিপিআই (এমএল)-এর ‘মাও ভবন’-এ বসেই এখনও যাবতীয় কাজ চালান তিনি।
আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের একাংশের দাবি, কোলিয়ারি এলাকায় বরং সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ রয়েছে। সে কারণে তিন বার তাঁকে কারণ দর্শাতে বলে বাড়িতে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। জবাব আসেনি। সোমনাথবাবু অবশ্য এ রকম চিঠি পাওয়ার কথাই মানতে চাননি। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনও সাংগঠনিক পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে আমি অন্তত জানি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.