কুলপিতে আইটিআই
জমি জটে আটকে গেল শিলান্যাস
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন রাজ্যে প্রতিটি ব্লকে একটি করে আইটিআই কলেজ তৈরি করা হবে। সেই মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে আইটিাই কলেজ তৈরির জন্য শিলান্যাসের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু যে জমি জটে আটকে গিয়েছে শিল্যান্যাস অনুষ্ঠান। উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে আইটিআই কলেজের শিলান্যাস করা যাবে না, গ্রামবাসীদের এই দাবিতে বিক্ষোভের জেরে ভেস্তে গিয়েছে শিলান্যাসের অনুষ্ঠান। এখন কলেজ নির্মাণের জন্য জমি সংগ্রহ করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে প্রশাসন। গ্রামবাসীদের সঙ্গে সভা করেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা কুলপি ব্লকের করঞ্জলি পঞ্চায়েতে দামোদরপুর নতুন পল্লির কাছে আইটিআই কলেজের জন্যে তিন একর খাস জমি ঠিক করে প্রশাসন। ওই জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে বেশ কিছু পরিবার। গত ৯ ফেব্রুয়ারি শিলান্যাসের দিন ঠিক করা হয়। নির্দিষ্ট দিনে মঞ্চ বেঁধে শুরু করা হয় অনুষ্ঠানের তোড়জোড়। শিলান্যাস করার কথা ছিল স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ চৌধুরীমোহন জাটুয়ার। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির হন ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক, বিধায়ক ও কুলপির বিডিও। তখনও মঞ্চে এসে পৌঁছননি সাংসদ। মঞ্চে রাখা শিলান্যাসের ফলকে লেখা ছিল ‘সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের সহায়তায় আইটিআই কলেজ নির্মাণ। ওই ফলক দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। গুজব ছড়ায়, ওই জমিতে মাদ্রাসা তৈরি হবে। এবং যাঁরা ওই জমিতে বসবাস করছেন, তাঁদের জন্য নেই কোনও পুনর্বাসনের প্যাকেজ। এই অবস্থায় কলেজ নির্মাণের প্রবল বিরোধিতা করেন তাঁরা। বাধ্য হয়ে শিলান্যাসের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম জমানায় গৃহহীন ওই পরিবারগুলিকে খাস জমিতে বসবাস করতে দেওয়া হয়েছিল। সকলের কাছে এখনও পাট্টা নেই ওই জমির। সব মিলিয়ে জমির পরিমাণ প্রায় ৬২ বিঘা। বর্তমানে ওই জমিতে বসবাস প্রায় ৬৫টি পরিবারের। জমির কিছু অংশে রয়েছে চাষযোগ্য জমিও। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাঁরা ওই জমিতে প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। মাদ্রাসা তৈরির গুজব শুনে সেদিন যে তাঁরা শিলান্যাস অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেছিলেন, তা স্বীকার করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তবে ওই জমিতে কলেজ তৈরি করার বিরোধী নন তাঁরাও। কারণ তাতে আখেরে লাভ হবে তাঁদের ছেলেমেয়েদেরই। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কলেজের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হলে তাঁরা ছেলেমেয়ে নিয়ে যাবেন কোথায়? সেই কারণে পুনর্বাসনের দাবিতেই তাঁরা ওই জমিতে কলেজ তৈরির বিরোধিতা করছেন। কুলপির বিডিও সদানন্দ পণ্ডা বলেন, “জমি অধিগ্রহণের বিষয় নিয়ে ২১ফেব্রুয়ারি গ্রামবাসীদের সভা ডাকা হয়েছিল। একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি সভা করে সিদ্ধান্ত জানানোর পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “সেদিন সভায় আইটিআই কলেজ হবে বার বার বলা সত্ত্বেও মাদ্রাসা তৈরির গুজব শুনে অনুষ্ঠান ভেস্তে দিলেন কিছু গ্রামবাসী। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হল প্রশাসনকে।”
কলেজের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কলেজ নির্মাণের জন্য প্রয়োজন তিন একর জমি। এর জন্যে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা অনুমোদন হয়ে গেছে। কলেজ নির্মাণ করতে গিয়ে যাতে ওই পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বিকল্প জমির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমার বাড়ি প্রকল্প, ইন্দিরা আবাস যোজনা বা গীতাঞ্জলি প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।” কিন্তু বিকল্প কোন জমিতে গ্রামবাসীদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে, সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর দেননি মহকুমাশাসক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.