ছোট আঙারিয়া মামলা
এপ্রিল থেকে ফের সাক্ষ্যগ্রহণ, প্রথম সাক্ষী সেই বক্তার
প্রায় দু’বছর পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হতে চলেছে ছোট আঙারিয়া মামলার। মেদিনীপুর আদালতে আগামী ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সাক্ষ্যগ্রহণ। সোমবার এই নির্দেশ দেন পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। প্রথম দিন সাক্ষ্য দেবেন বক্তার মণ্ডল, ২০০১ সালে যে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল।
সোমবার মেদিনীপুরের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে ছোট আঙারিয়া মামলার দিন নির্দিষ্ট ছিল। গত বছর ১৪ মে চার্জগঠনের পর থেকে মামলাটি পিছিয়েই যাচ্ছিল। অভিযুক্তপক্ষের বক্তব্য ছিল, মেদিনীপুর আদালতের চার্জগঠনকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। এ দিন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, বিষয়টি যখন হাইকোর্টের বিচারাধীন, তখন মেদিনীপুর আদালতে মামলা এগোতে পারে না। সিবিআইয়ের আইনজীবী তাপস বসুর পাল্টা যুক্তি ছিল, হাইকোর্ট তো স্থগিতাদেশ দেয়নি। তাহলে মেদিনীপুরে মামলা এগোতে আপত্তি কোথায়? দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক জানান, আগামী ৮ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
২০০১ সালের ৪ জানুয়ারি গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণ হয়। বেশ কয়েকজনকে খুনের পর লাশ গায়েব করার অভিযোগ ওঠে সিপিএম নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন বক্তার। তদন্তে নেমে আরও ছ’জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। পরে গোলাপ মল্লিক নামে এক অভিযুক্ত খুন হন। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত পাঁচ জন মেদিনীপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার সাক্ষ্যগ্রহন হয়। কিন্তু একের পর এক সাক্ষী ‘বিরূপ’ হওয়ায় তপন ঘোষ, সুকুর আলি-সহ অভিযুক্ত আট জনকেই বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত। অভিযুক্তদের মধ্যে ৫ জন অবশ্য অধরা ছিল। এদেরই একজন চাঁদাবিলার দিল মহম্মদ। রাজ্যে পালাবদলের পর দিল ধরা পড়ায় নতুন করে প্রাণ পায় মামলাটি।
২০১১ সালের ১৫ মে অস্ত্র আইনের পুরনো মামলায় পুলিশ দিলকে গ্রেফতার করে। ফের তদন্তে নামে সিবিআই। ২০১২ সালের ১৪ মে মেদিনীপুরের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে দিল মহম্মদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ১২০-বি, ১৪৮, ১৪৯, ২০১, ৪৩৬ ধারা ও অস্ত্র আইনের ২৫ ও ২৭ ধারায় চার্জগঠন হয়েছে। আদালতের এই চার্জগঠনকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে অভিযুক্তপক্ষ। তাদের বক্তব্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও অস্ত্র আইনের ২৫ ও ২৭ ধারা এই মামলায় থাকতে পারে না। কারণ, ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার হয়নি। বন্দুকও মেলেনি।
সিবিআইয়ের পাল্টা বক্তব্য, ডিএনএ পরীক্ষা থেকে স্পষ্ট ওই রাতে ৫ জন খুন হয়েছেন। আসলে ঘটনার পর যাবতীয় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে। খুন করার পর লাশ গায়েব করা হয়েছে। দু’পক্ষের এই বক্তব্য, পাল্টা বক্তব্যের মধ্যেই ফের শুরু হতে চলেছে ছোট আঙারিয়া মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ।
প্রথম দিন যাঁর সাক্ষ্য দেওয়ার কথা, সেই বক্তার মণ্ডলকে আগে রাজসাক্ষী করেছিল সিবিআই। কিন্তু, আদালতে সাক্ষী দিতে এসে বয়ান বদলে ফেলার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সময় বক্তার জানান, ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। বাধ্য হয়ে তাঁকে ‘বিরূপ’ সাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করে সিবিআই। রাজ্যে পালাবদলের পর সেই বক্তারই ফের নতুন করে সাক্ষ্য দিতে রাজি হন। সোমবার তিনি বলেন, “সত্যি কথা বললে সিপিএম তখন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। তাই আদালতে দাঁড়িয়ে সত্যি কথা বলতে পারিনি। এ বার সব বলব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.