গাছ বিক্রিতে অনিয়ম, টাকা ফেরতের নির্দেশ
গাছ বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছর মার্চে গোঘাট-১ ব্লকের রঘুবাটি পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। শনিবার মহকুমাশাসকের নির্দেশে প্রধান সিপিএমের গুণধর মণ্ডলকে সাত দিনের মধ্যে গরমিল হওয়া প্রায় ১১ লক্ষ টাকা সরকারি খাতায় জমা করার নির্দেশ সংক্রান্ত চিঠিও পাঠিয়েছেন বিডিও দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “সরকারি নিয়মবিধি না মেনে গাছ বিক্রি হয়েছে। ১০ লক্ষ ৮৯ হাজার ৪০০ টাকার গরমিল ধরা পড়েছে। পঞ্চায়েত প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা তিনি ফেরত না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গুণধরবাবু অবশ্য গাছ বিক্রিতে দুর্নীতির কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “আমি কোনও দুর্নীতি করনি। তবে, সরকারি সব নিয়ম-কানুন না জানায় কিছু পদ্ধতিগত ভুল হয়ে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রেও যাঁরা নিয়মকানুন জানতেন, সেই পঞ্চায়েত আধিকারিকরাই হাতে-কলমে কাজটা করেছেন। তাঁরাই ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেননি।” প্রশাসনের নির্দেশ মতো তিনি টাকা ফেরত দেবেন কি না, তা নিয়ে প্রধান জানান, দলীয় ভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বঙ্কিমচন্দ্র দলুই বলেন, “দুর্নীতি নিয়ে আমাদের অভিযোগ যে ঠিক ছিল তা প্রমাণিত হল। আমরা খুশি। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।”
২০০৮ থেকে ২০১২ পাঁচ বছরে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বহু গাছ কেটে বিক্রি করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রায় দেড় কোটি টাকার গাছ বিক্রি করলেও তার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকেই তৃণমূল ক্ষোভ-বিক্ষোভ, ঘেরাও-কর্মসূচি জারি রেখেছিল পঞ্চায়েতে। তদন্তের দাবিও জানিয়েছিল প্রশাসনের কাছে। গত মঙ্গলবার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা সারা রাত ১১ জন পঞ্চায়েত কর্মীকে ঘেরাও করে রাখেন। ঘেরাওকারীদের দাবি ছিল, প্রশাসনিক তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা মানা হবে না। তৎক্ষণাৎ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে সাজা দিতে হবে। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় অডিটের ব্যবস্থা করলে ঘেরাও ওঠে। মহকুমাশাসকের তত্ত্বাবধানে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিমলাপ্রসাদ সিংহবাবু, গোঘাট-১ ও ২ ব্লকের বিডিও যথাক্রমে দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস এবং শিবপ্রিয় দাশগুপ্তের উপস্থিতিতে অডিটের কাজ ঘণ্টা চারেকের মধ্যেই শেষ হয়।
গোঘাট-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তা হল গাছ বিক্রির ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের অর্থ ও পরিকল্পনা নিয়ে উপ-সমিতিতে কোনও আলোচনা হয়নি। গাছ বিক্রির বিজ্ঞপ্তি জনগণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হয়নি। অর্থ ও পরিকল্পনা স্থায়ী সমিতির বৈঠকে এ নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়নি। নথিতে গাছের সংখ্যা, কী গাছ এবং তার দামের কোনও উল্লেখ নেই। নিলামের পদ্ধতিও সঠিক ভাবে মানা হয়নি। সরকারি নির্দিষ্ট দরের কম দামে কাটা গাছ বিক্রি হয়েছে। অনুমতি সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র নেই। নিলামের কাগজপত্র যথাযথ কি না, প্রধানের তরফ থেকে তার সত্যতার প্রমাণ মেলেনি। নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ডাকদাতার দাম আদায়ের আগেই গাছ কাটা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.