উচ্ছেদ না আপস এই দোটানাতেই থমকে আছে নবনির্মিত লেক মল চালু হওয়া। কারণ, জনা পঞ্চাশ হকার পথ আটকে বসে থাকায় পুনর্গঠনের পরেও চালু করা যাচ্ছে না ওই পুর-বাজারটি। হকারদের সরাতে গেলে পিছু টেনে ধরছে রাজ্য সরকারের হকার উচ্ছেদ না-করার নীতি। আবার অন্য দিকে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই বলছেন হকার না সরালে ওই কাজ করা সম্ভব নয়। অথচ, ওই হকারদের যে পুনর্বাসন দেওয়া হবে না, তা জানিয়ে দিয়েছে সরকার। সে ক্ষেত্রে সমাধান কোন পথে, এই প্রশ্নেই আপাতত ঝুলে বিষয়টি। অগত্যা ফের আলোচনার রাস্তাতেই হাঁটছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে সোমবার বৈঠক করেছেন দলের প্রবীণ নেতা ও মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার। কিন্তু সমাধানসূত্র মেলেনি। সুব্রতবাবুর কথায়, “ওঁদের পুর্নবাসন দেওয়া হবে না। আবার জোর করে উচ্ছেদও করা হবে না। আলোচনা করে চেষ্টা হবে।” যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, ওই মার্কেট গড়ে ওঠার পরে একাধিক বার আলোচনায় বসেও কোনও লাভ হয়নি। সে ক্ষেত্রে ওই হকারদের না-সরিয়ে কী ভাবে সমাধানের পথ মিলবে, তার কোনও দিশাও মেলেনি সুব্রতবাবুর কথায়।
কলকাতা পুরসভার অন্যতম বড় বাজার এই লেক মার্কেট। ২০০৫ সালে বেহাল ওই বাজারটি অত্যাধুনিক ভাবে গড়ে তুলতে পিপিপি মডেলের সাহায্য নেয় পুর-প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দা তথা মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, ওই বাজার গড়ার কাজ শেষ। এখন শুধু খোলার অপেক্ষা।
আর তাতেই বাদ সেধেছে জনা পঞ্চাশ হকার। যাঁরা নবনির্মিত ওই আটতলা বাজারে ঢোকার মুখে পথ আগলে বসে রয়েছেন। যাঁদের একটা অংশ আবার তৃণমূলেরই সমর্থক। কেউ কেউ কংগ্রেসের সমর্থক বলেও পরিচিত। এ নিয়ে অবশ্য সুব্রতবাবুর বক্তব্য, “কে কোন দলের, তা দেখতে চাই না। ওঁদের ওই জায়গা ছেড়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হবে।”
মার্কেট তৈরি হয়েও চালু না হওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জট কাটিয়ে অবিলম্বে ওই মার্কেট চালুর ব্যবস্থা করার দায়িত্ব সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে দিয়েছেন তিনি। এ দিনের বৈঠক শেষে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, ওই মার্কেট চালুর ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনেকেই আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু প্রবেশপথ আটকে রাখলে তো সেখানে ঢোকাই যাবে না। মন্ত্রী বলেন, “মার্কেটটি চালু না হওয়ায় পুরসভার অনেক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। লোকসান হচ্ছে ঘর নেওয়া অন্য ব্যবসায়ীদেরও।” |