পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ
চিত্রকরের নাতিকে মারধরে গ্রেফতার হয়নি কেউই
প্রয়াত চিত্রকর মুকুল দে-র নাতি শিবশ্রী উকিলকে মারধরের ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। তারই প্রতিবাদে সোমবার মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে স্মারকলিপি দিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি। সংগঠনের বোলপুর-শান্তিনিকেতন শাখার সম্পাদক শৈলেন মিশ্র ও সহ-সভাপতি মণীষা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুক পুলিশ। এক পক্ষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেও, ফৌজদারি মকদ্দমা থাকা সত্ত্বেও অন্য পক্ষ বহাল তবিয়তে ঘুরে বেরাচ্ছে।” তাঁদের দাবি, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, তাই পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।
বোলপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “স্মারকলিপি পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি জমিতে বিশ্বভারতীর সীমানা প্রাচীর দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রয়াত শিল্পীর পরিবারের সঙ্গে বিশ্বভারতীর ঝামেলা দীর্ঘ দিনের। বিষয়টি নিয়ে অতীতে বোলপুর আদালতে মামলাও হয়েছিল। সেই মামলার রায় অবশ্য মুকুলবাবুর পরিবারের পক্ষেই গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শান্তিনিকেতনের সেবাপল্লি এলাকার সেই জমিতে খুঁটি পোঁতা নিয়ে প্রয়াত শিল্পীর পরিবারের সঙ্গে গণ্ডগোল বাধে বিশ্বভারতীর। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় সদলবলে এসে সেই খুঁটি উপড়ে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। তাতে বাধা দিতে গিয়ে বিশ্বভারতীর কয়েক জন কর্মী ও আধিকারিকদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন মুকুল দে-র নাতি। তাঁর বাড়ির দুই মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে শিবশ্রীবাবু বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত-সহ বেশ কয়েকজন আধিকারিকের নামও করেছিলেন। বিশ্বভারতী অবশ্য শিবশ্রীবাবুর দাবি উড়িয়ে দিয়ে থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। গত বুধবার বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের হয়ে ইন্দিরা গাঁধীকেন্দ্রের অধিকর্তা তথা অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে দাবি করেন, শিবশ্রীবাবুর অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ইতিমধ্যেই বোলপুর আদালতে শিবশ্রীবাবু আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার পর ছ’ দিন কেটে গেলেও বিশ্বভারতীর তরফে কেউই জামিন নেননি। পুলিশের তরফেও তদন্তের আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই করা হয়নি। এ দিন পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিবশ্রীবাবু বলেন, “বিশ্বভারতী প্রভাব খাটিয়ে গ্রেফতারি এড়াচ্ছে। জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ থাকলেও অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাতে দেখা যাচ্ছে। বিশ্বভারতীর আধিকারিক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও চুরির মতো অভিযোগ থাকলেও পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করছে না।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য দাবি, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঝামেলা হওয়ায়, তদন্তের রিপোর্ট বিভিন্ন স্তর থেকে চাওয়া হয়েছে। তাই ওই ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্য দিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে তাকে আমল না দিয়ে এ দিনও জেলার পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা দাবি করেন, “উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। তদন্ত শেষ হলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলেও বিশ্বভারতীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.