লড়াইয়ে সামিল হওয়ার ইচ্ছে
দেশে ফিরছেন শঙ্কিত বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশ ভাল নেই। তাই ‘ইন্ডিয়া’ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে ‘দ্যাশে’ ফিরছেন দলে দলে বাংলাদেশি। কারও মনে একরাশ উদ্বেগ। কেউ বা যাচ্ছেন শাহবাগ স্কোয়ারের লড়াইয়ে সামিল হতে। সোমবার পেট্রাপোল দিয়ে দেশে ফেরার আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার এক সরকারি কর্মী বলে গেলেন, “মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে লড়াই শুরু হয়েছে, তাতে জিততেই হবে। না হলে গোটা দেশটাই মৌলবাদীদের হাতে চলে যাবে। তাই ফিরছি।” একই সুর চট্টগ্রামের অমরকান্তি ওয়াদ্দারের গলাতেও। রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে চলা আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন করেন তিনিও বলে জানালেন বাংলাদেশের প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার মামুন বাবু। ‘বাসা’র জন্য চিন্তাতেও অবশ্য বাড়ি ফিরছেন কেউ কেউ। দিন কয়েক আগে বন্ধুর সঙ্গে দার্জিলিং বেড়াতে এসেছিলেন পেশায় কম্পিউটার ব্যবসায়ী, ঢাকার শঙ্কর বিশ্বাস। ইচ্ছে ছিল সপ্তাহ খানেক চুটিয়ে ঘুরবেন। কিন্তু তা আর হল কই? তিন দিন কাটতে না কাটতেই দেশে ফিরতে হল তাঁকে। পেট্রাপোল সীমান্তের একটি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “দার্জিলিঙে বসে টিভিতে বাংলাদেশের খবর দেখতে পাইনি। আরও কিছু দিন থাকার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু দ্যাশের যা অবস্থা! নিজের ব্যবসা নিয়েও চিন্তায় রয়েছি।” বাংলাদেশে ফেরার জন্য পেট্রাপোল সীমান্তে এখন চিন্তিত মুখের লাইন ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে।
বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশিরা।—নিজস্ব চিত্র।
চিন্তারই কথা। শাহবাগ স্কোয়ার উত্তাল। হরতাল, অবরোধ, গুলি এখন ও-পার বাংলার নিত্যসঙ্গী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে পাকিস্তানের হয়ে সওয়াল করেছিল, সেই রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে সরব বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, যাঁরা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন কিংবা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। পার্ক সার্কাসে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সাভারের বাসিন্দা, বৃদ্ধ শাহজাহান মিয়াঁ বললেন, ‘‘দ্যাশের কী অবস্থা বুঝতে পারছি না। তাই তাড়াতাড়ি ফিরছি।” ক্যানসারে আক্রান্ত এক মহিলা ঢাকা থেকে কলকাতায় এসেছিলেন চিকিৎসা করাতে। চিকিৎসকের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হত এখনও বেশ কিছু দিন। কিন্তু তিনি চিকিৎসা না করিয়েই ফিরে গেলেন বাড়িতে। পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে ঢাকার সৈফুদ্দিন বললেন, “বেড়াতে এসেছিলাম। বাসা থেকে ফোন করে বলছে ফিরে আসতে। শুনছি হরতাল চলছে। কী ভাবে ফিরব বুঝতে পারছি না।” বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার জন্য এ দেশে আসতেও তৈরি হচ্ছে জটিলতা। ঢাকার গারগাঁওয়ের বাসিন্দা মাহামুদা হাসিম বলেন, “কৃষ্ণনগর যাব। দুপুরে বেনাপোল পেরিয়ে পেট্রাপোলে এসেছি। কিন্তু এখানে পৌঁছাতে খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছে। মানিকগঞ্জে হরতাল চলছে। অথচ ঢাকা থেকে পেট্রাপোল আসতে হলে মানিকগঞ্জ পেরোতে হবে। তাই ঘুরপথে এসেছি।” রাজশাহির অল্প বয়সী দুই কিশোরী পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ দিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢোকার সময় এক রকম ঘোষণাই করে দিল পাড়ায় পাড়ায় তারা জামাত-বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবে। বাংলাদেশ অপেক্ষায় আছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.