অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে এ বার সত্যিই অগ্নিকাণ্ড। ঢাকা বইমেলায় বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গেল প্রায় দু’কোটি টাকার বই। কাল রাত একটা নাগাদ এই আগুন লাগে। ক্ষতি হয়েছে অন্তত ৪০টি দোকানের। একেবারে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে এর মধ্যে প্রায় ২৭টি দোকান। ১৯৯৭ সালে কলকাতা বইমেলায় অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ স্মৃতি থাকলেও ঢাকায় অবশ্য এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম।
আগুন লাগার কারণ কী, তা জানতে ইতিমধ্যেই একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে প্রকাশকদের সন্দেহের তির জামাতে ইসলামি ও তার সঙ্গী অন্য মৌলবাদী সংগঠনগুলোর দিকে। তাঁদের ব্যাখ্যা, বাংলাদেশের এখন যা পরিস্থিতি রাজনৈতিক ভাবে তার মোকাবিলা করতে পারছে না জামাত। তাদের ডাকা হরতাল ব্যর্থ করতে পথে নামছেন সাধারণ মানুষ। এ সবের বদলা নিতেই এই আক্রমণ। |
পুড়ে যাওয়া বইয়ের রাশি। সোমবার ঢাকা বইমেলায়।—নিজস্ব চিত্র। |
কাল রাতে আগুন লাগার কিছু ক্ষণ পর বইমেলা চত্বরে পৌঁছয় দমকল বাহিনী। তাদের কয়েকটি ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। দমকল কর্তাদের প্রাথমিক ধারণা, বিদ্যুতের খুঁটির তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা।
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ প্রকাশকদের একাংশ। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন রাত আটটায় মেলা শেষ হয়। বইমেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় রাত ৯টার মধ্যেই। তাই বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে কী ভাবে আগুন লাগবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। আগুন লাগার আগে বিস্ফোরণের আওয়াজও অনেকে শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।
তা ছাড়া, শাহবাগ আন্দোলনে কোণঠাসা জামাত কিছু দিন ধরেই লেখক ও প্রকাশকদের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ। ফলে সব মিলিয়ে আরও জোরদার হয়েছে নাশকতার চক্রান্তই।
১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ঢাকা বইমেলা চলার কথা মাসব্যাপী। এ বার শেষ মুহূর্তের এই অগ্নিকাণ্ড পাল্টে দিল সব হিসেব-নিকেশ। |