পরীক্ষার আগের রাতে অনুষ্ঠান, অভিযুক্ত পুলিশ
রকারি নির্দেশ অগ্রাহ্য করে মাধ্যমিক পরীক্ষার আগের রাতে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে কুলটিতে পুলিশ ও একটি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দৌড় প্রতিযোগিতা উপলক্ষে নিয়ামতপুর ফাঁড়ি ও মিঠানি গ্রামের মাঠে দু’টি জলসার আসর বসে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও এ নিয়ে সরব হয়েছে নানা শিক্ষক সংগঠন। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “এমন ঘটে থাকলে তা ঠিক হয়নি।” স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ নিয়ামতপুর ফাঁড়ির মাঠ থেকে একটি ৬ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। সেটি শেষ হয় মিঠানি গ্রামের মাঠে গিয়ে। ফাঁড়িতে ম্যারাথনের সূচনা করেন পুলিশ কমিশনার। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিযোগীরা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই সাউন্ড বক্স বাজিয়ে গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। ফলে, সমস্যায় পড়েন আশপাশের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। জানা গিয়েছে, কেউ কেউ থানায় ফোন করে অনুষ্ঠান বন্ধের অনুরোধও জানান। শেষে বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা বুঝে রাত পৌনে ৯টা নাগাদ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফাঁড়ির পুলিশ অনুষ্ঠানের কথা স্বীকার করে নিলেও তাদের দাবি, অনেক নিচু স্বরে মাইক বাজানো হয়েছে।
মাইক-বক্সে সাজছে জলসার মঞ্চ।—নিজস্ব চিত্র।
মিঠানিতে দৌড় প্রতিযোগিতা শেষে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ অনুষ্ঠানের মঞ্চে সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কার দেন পুলিশ কমিশনার ও রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। সেখানেও সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে মাইক না বাজানোর ব্যাপারে সরকারি নির্দেশের বিজ্ঞপ্তি পুলিশ কমিশনারের অফিসেও পাঠানো হয়েছে। এর পরেও যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তা ঠিক হয়নি।” তিনি জানান, কমিশনারেট এলাকায় মাইক বাজানোর অনুমতি মহকুমাশাসকের দফতর নয়, কমিশনারের দফতর থেকে দেওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠন। এবিটিএ-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি শান্তিরাম ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “যাদের আইন রক্ষা করার কথা, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় আইন ভাঙা হল। এটাই আশ্চর্যের।” এসটিইএ-এর রাজ্য উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য অসিত উপাধ্যায়ের দাবি, “আগে কখনও এ রকম শুনিনি। পুলিশই কেন আইন ভাঙল, বুঝতে পারছি না।” তৃণমূল শিক্ষা সেলের বর্ধমান শিল্পাঞ্চল সভাপতি নিমাই মহন্তের প্রতিক্রিয়া, “এ রকম হয়ে থাকলে তা ঠিক হয়নি।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “এমন ঘটনা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বেদনাদায়ক।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর দে-র ক্ষোভ, “বামপন্থী আন্দোলনে মাইক নিষিদ্ধ করে নিজেরাই জলসার অনুষ্ঠানে মাইক বাজিয়ে নিয়ম ভাঙল পুলিশ-প্রশাসন।”
বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা বুঝে রবিবার তড়িঘড়ি মাঝপথে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দের দাবি, মিঠানিতে পুরস্কার দেওয়ার জন্য নিচু স্বরে প্রতিযোগীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ামতপুর ফাঁড়ি বা মিঠানি গ্রামে অনুষ্ঠানের কথা তাঁর জানা নেই। পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমরা আইনশৃঙ্খলার দিকে নজর রেখেছি। যে অভিযোগ উঠেছে, তা গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ নেব।” কৃষিমন্ত্রী মলয়বাবু অবশ্য পুরো বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.