পরীক্ষার বিধি বাম! অগত্যা তাই অ-মাইক হতে হচ্ছে বামেদের! জাঠায় লোক টানতে হচ্ছে খালি গলায়। ধারে-কাছে পরীক্ষা কেন্দ্র থাকলে খালি গলা ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা আছে রাজ্য সম্পাদকের! সেখানে কমরেডদের নীরব জনসংযোগই পরীক্ষার মুখে!
আগামী ১ মার্চ কলকাতার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে একটি জাঠা নিয়ে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরু করবেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। সঙ্গে থাকবেন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও। বিগত পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, একগুচ্ছ দাবিতে চারটি কেন্দ্রীয় জাঠা মিলিত হবে দিল্লিতে। নানা ছোট শহর থেকে থাকবে একাধিক উপজাঠা। পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে এই জাঠা যখন যাবে, তখন রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং তার সঙ্গে নানা স্কুলের পরীক্ষা। মাইক ব্যবহারে তাই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। আর এই সুযোগেই ‘শব্দদূষণ’ বন্ধ রেখে দলীয় কর্মীদের খালি গলায় এবং কোথাও নীরবে মানুষকে কাছে টানতে হবে!
যাত্রার পোশাকি নাম ‘সংগ্রাম বার্তা জাঠা’। অসুস্থতা কাটিয়ে রানি রাসমণিতে ১ মার্চ জাঠার সূচনায় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও (ঘটনাচক্রে, সে দিনই তাঁর জন্মদিন) উপস্থিত থাকতে পারবেন বলে বিমানবাবুর আশা। কিন্তু কর্মীদের উৎসাহে কিছুটা জল ঢেলে দিচ্ছে রাজ্যে জারি-থাকা মাইক-বিধি। রবিবার আলিমুদ্দিনে বিমানবাবু বলেই দিয়েছেন, “জাঠা যে ভাবে করতে পারতাম, করতে পারছি না। খানিকটা হয়ে যাচ্ছে নীরবে, নিভৃতে! মাইক ব্যবহার করা যাবে না পরীক্ষার জন্য।” তবে বিমানবাবু বলছেন, “হেঁড়ে গলায় মাইকে চিৎকার করা যাবে না! আমাদের নির্দেশ, কোথাও শব্দদূষণ করা যাবে না! যেখানে পরীক্ষা নেই, সেখানে খালি গলায় প্রচার চলবে। যেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র আছে, সেখানে সেটাও চলবে না!” জাঠার লক্ষ্য যতই সর্বভারতীয় হোক, লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভাবনা তাঁরা আগে ভাবছেন বোঝাতে চেয়েছেন বিমানবাবু। তাঁর কথায়, “আমরা কামনা করি, ভাল শরীর-মন দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা লিখে আসুক।”
সদ্য ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যে যে ভাবে ‘শাস্তি’র দাপট চলছে, তা বন্ধ করতে প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি করেন বিমানবাবু। তবে এমন আক্রমণ সত্ত্বেও জাঠা এই রাজ্যে নিরাপদেই উতরে যাবে বলে আশাবাদী বিমানবাবু। দিল্লি পৌঁছনোর আগে রাজ্যে অবশ্য মাইকের ‘বিকল্প’ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে কমরেডদের। জোরে কণ্ঠ ছাড়লেও চলবে না তাঁদের! পরীক্ষার বিধি বাম যে! |