কংগ্রেস এবং তৃণমূলের ভোট ভাগাভাগিতে লাভবান হওয়ার আশা রয়েছে বিলক্ষণ। তবে তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে এ বার বিস্তর টাকার খেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। কোনও দলের নাম না-করেই তাঁর অভিযোগ, বিজেপি বা অন্য কোনও চতুর্থ শক্তি যাতে বেশি ভোট কাটতে না-পারে, তার জন্য টাকা খরচ করা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই বিজেপি বা অন্য কোনও দল বাম-বিরোধী ভোট কাটতে পারলে তাতে আখেরে বামেদেরই লাভ। সিপিএমের অভিযোগ, সেই জন্যই চতুর্থ প্রার্থীর ভোট টানা বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে।
আলিমুদ্দিনে রবিবার বিমানবাবু বলেন, “একটা কেন্দ্রকে ঘিরে (অর্থাৎ আসন পিছু) এত টাকার খেলা আগে হয়নি! চতুর্থ প্রার্থীর ভোট টানা টাকার খেলায় নিভু নিভু হয়ে যেতে পারে! কোটি কোটি টাকার খেলা! আশায় বাসা না বেঁধে ২৮ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করি!” সম্প্রতি জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি ১০%-এর বেশি ভোট পেয়েছিল। উল্টো দিকে, সংখ্যালঘু-প্রধান দু’টি দলও বেশ কিছু ভোট পেয়েছিল। ইংরেজবাজার, রেজিনগর ও নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও বিজেপি যেমন লড়ছে, তেননই সংখ্যালঘু-প্রধান কয়েকটি দল জোট বেঁধে প্রার্থী দিয়েছে। বিমানবাবুর ব্যাখ্যা, “চতুর্থ প্রার্থী কোথাও কোথাও কিছু ভোট পাবে। কাদের দিক থেকে কতটা ভোট কাটবে, হিসাব করা মুশকিল। বামপন্থীদের ভোটটা কম টানবে বলে আশা করা যায়।” বাম-বিরোধী ভোটের আরও বেশি ভাগাভাগি আটকাতেই ‘টাকার খেলা’ হয়ে থাকতে পারে বলে বিমানবাবুদের অভিযোগ। তৃণমূল এবং বিজেপি সূত্রে অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “সংখ্যালঘু-সহ সব অংশের মানুষই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন পরিকল্পনায় আস্থাশীল। এখানে ঘুষ দিয়ে কিছু আদায়ের প্রশ্ন অবান্তর!”
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আবার অভিযোগ, রেজিনগরে নিচু তলার বেশ কিছু বাম কর্মী-সমর্থক তলে তলে তৃণমূলকে সমর্থন করেছেন! ভোটের পরে কংগ্রেসের তরফে এলাকা-ভিত্তিক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে আসছে বলে অধীরের দাবি। তাঁর বক্তব্য, বাম নেতৃত্বের রাজ্য বা জেলা স্তর থেকে এই বিষয়ে কিছু হয়নি। কিন্তু স্থানীয় ভিত্তিতে বামেদের একাংশ তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবীরের জামানত বাঁচাতে তলে তলে তাঁকে ভোট দিয়ে এসেছেন! প্রত্যাশিত ভাবেই বাম নেতৃত্ব এমন ধারণাকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়েছেন।
উপনির্বাচনে এ বার বিপুল হারে ভোটদানকে তাৎপর্যপূর্ণ ধরে নিয়েও ফল কী হবে, তা নিয়ে নিশ্চিত কোনও দাবি করতে চাননি বিমানবাবু। বামেদের ভোট বাড়বে, এমন দাবিও করেননি। তবে এ দিন তিনি বলেছেন, “তিন ভাগে ভোট ভাগ হবে। ২০০১ সালে ৩৮% ভোট পেয়ে আসন জয়লাভ হয়েছিল। আমার ধারণা, ভোট বিভাজনে এ বারও এই রকম ফল হবে।”
প্রসঙ্গত, তিনটি কেন্দ্রেই ২০১১-য় পরিবর্তনের ভোটেও গড়ে ৩৭-৩৮% ভোট পেয়েছিল বামেরা।
|