দীর্ঘ দিন নানা জটিলতায় আটকে থাকা কলেজ স্ট্রিট মার্কেট (বর্ণ পরিচয়) পুনর্গঠনের কাজ এ বার দ্রুত বাস্তবায়িত হবে বলে মনে করছে কলকাতা পুর প্রশাসন। পিপিপি প্রকল্পে ২০০৫ সালে ওই প্রকল্প গড়ার কাজ শুরু করে বেঙ্গল শেল্টার নামে একটি সংস্থা। ১৮ মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও তা হয়নি গত ৮ বছরেরও। ফলে ক্ষোভ বাড়ছিল ওই বাজারের পুরনো ব্যবসায়ীদের। অস্বস্তিতে ছিল পুর প্রশাসনও।
পুর সূত্রের খবর, কাজে বিলম্বের কারণ খুঁজতে বুধবার বর্ণ পরিচয় প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্ণধার সমর নাগের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ, পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। হাজির ছিলেন অর্থ ও বাজার দফতরের পদস্থ অফিসারেরাও। বৈঠক শেষে তারকবাবু বলেন, “দু’পক্ষের আলোচনায় সমাধানের পথ মিলেছে। ইতিমধ্যেই মার্কেটের এ ব্লকের কাজ অনেকটা এগিয়েছে। দোকান বিলিও হয়েছে। খুব শীঘ্রই বি ব্লকের কাজ শুরু হবে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে পুরনো কলেজ স্ট্রিট মার্কেট ভেঙে সেখানে নতুন আধুনিক বাজার করার পরিকল্পনা নেন তৎকালীন মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়। পরে বাম বোর্ডের আমলে ওই বাজার তৈরির ভার পায় বেঙ্গল শেল্টার। চুক্তিও হয় পুরসভার সঙ্গে। তাতে বলা হয়, বাজারটি হবে আটতলা। একতলা ও দোতলায় ঠাঁই পাবে পুরনো বাজারের দোকানগুলি। কিন্তু সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ পুরনো দোকানদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, একতলায় দোকান বিলি নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। পূর্বতন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারও এ নিয়ে একাধিকবার বেঙ্গল শেল্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই দফতরের নতুন দায়িত্ব পেয়ে তারকবাবুও কলকাতার ঐতিহ্যশালী ওই মার্কেটের দ্রুত রূপায়ণে সচেষ্ট হন। বুধবার বৈঠকের পর তিনি বলেন, “মার্কেটের পুরনো ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব না দেওয়ায় জটিলতা ছিল। তাঁদের দিকটিও ভাবা হবে বলে জানিয়েছি। নির্মাণ সংস্থাও তাতে রাজি।”
এ দিকে, বর্ণ পরিচয় গড়ার কাজে বিলম্ব নিয়ে সমরবাবুর বক্তব্য, “দোকান বিলি নিয়ে ১০০ বার শুনানি করেছে পুর প্রশাসন। তাতে সময়ও লেগেছে। প্ল্যান অনুমোদনেও দেরি হয়েছে। একাধিকবার বদল করা হয়েছে প্ল্যান। এ সব কারণেই দেরি।”
তারকবাবু জানান, সংস্থার কর্তার সঙ্গে বৈঠকে অনেকটাই জট খুলেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বি ব্লকের বিল্ডিংয়ের রিভাইজড প্ল্যান দিতে বলা হয়েছে। এর পরই ওই ব্লকে কাদের কোথায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে তার তালিকা দিয়ে দেবে পুরসভা। সমরবাবু বলেন, “পুরসভার তালিকা দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে বি ব্লকের কাজ শেষ করব।” |