দরপত্র ডাকা নিয়ে ফের বেনিয়মে অভিযুক্ত পুরসভা
ফের বেনিয়মের অভিযোগ উঠল আসানসোল পুরসভার বিরুদ্ধে। এ বার প্রশ্ন উঠেছে দু’টি জল সরবরাহ কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র ডাকার পদ্ধতি নিয়ে। কেন এই বেনিয়ম হয়েছে, পুর কর্তৃপক্ষের কাছে তা লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছে রাজ্যের অডিট দফতর। সরব হয়েছে বিরোধীরাও। যদিও পুরসভা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। দরপত্র ডাকা নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে এর আগেও বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত নভেম্বরে রাজ্য সরকারের লোকাল অডিট দফতরের আধিকারিকেরা হিসেব পরীক্ষা করার সময়ে এই বেনিয়মের বিষয়টি জানতে পারেন। জানা গিয়েছে, আসানসোল পুরসভার কালাঝরিয়া ও ইসমাইলে দু’টি জল সরবরাহ কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে ঠিকা সংস্থাটি নিযুক্ত ছিল তাদের মেয়াদ ফুরিয়েছে বছরখানেক আগে। এর পরে নিয়ম অনুযায়ী ওই দুই জল সরবরাহ কেন্দ্র দেখভালে বেসরকারি সংস্থা নিয়োগের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। বরাত পাওয়ার জন্য আবেদন করে বেশ কিছু ঠিকা সংস্থা। কিন্তু তাদের মধ্যে কাউকেই বরাত দেওয়া হয়নি। মেয়াদ ফুরিয়ে পুরনো ঠিকা সংস্থাকে দিয়েই জল সরবরাহ কেন্দ্র দেখভালের কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আর সে নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অডিট দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, নতুন দরপত্র ডাকার পরে যে সংস্থা সর্বনিম্ন দর হেঁকেছিল তাকে কাজের বরাত দেওয়া হল না কেন। কেনই বা পুরসভার টেন্ডার কমিটির সর্বসম্মত কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই মেয়াদ ফুরনো সংস্থাকে দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রশ্ন উঠেছে, পুরনো সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানোর আগে নতুন দরপত্র বাতিল করা হল না কেন।
জানা গিয়েছে, অডিট দফতরের এই তিনটি প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পুর কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। তাই অডিট দফতর বিষয়টিকে বেনিয়ম বলেই ঘোষণা করেছেন। গত ২১ নভেম্বর পুর কর্তৃপক্ষকে লেখা একটি চিঠিতে অডিট দফতরের সহকারি অডিট অফিসার জানিয়ে দিয়েছেন, গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই পুরনো সংস্থাটিকে জল সরবরাহ কেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ যে অর্থ দেওয়া হয়েছে, তা বৈধ খরচ হিসেবে ধরা যাবে না।
পুরসভার বিরুদ্ধে ওঠা এই বেনিয়মের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। পুরসভার বিরোধী নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের বক্তব্য, “আমরা এই বেনিয়মের অভিযোগের কথা জেনেছি। পুরসভার অধিবেশনে এ রকম আরও কিছু বেনিয়ম নিয়ে আমরা পুর কর্তৃপক্ষের জবাব চাইব।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত সাড়ে তিন বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এই পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে এ রকম একের পর এক বেনিয়মের অভিযোগ উঠছে। পুর কর্তৃপক্ষ এ ভাবে বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলেও তাঁর দাবি।
দরপত্র সংক্রান্ত এই বেনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান শিবদাস চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, তিনি কিছুই জানেন না। তিনি শুধু বলেন, “এটা মেয়র ভাল বলতে পারবেন।” মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার এ বিষয়ে কোনই মন্তব্যই করতে চাননি। তবে জল সরবরাহ দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম বলেন, “এটা বেনিয়ম হলেও কোনও দুর্নীতি হয়নি। অডিট দফতর যে প্রশ্ন তুলেছে, তার উত্তর আমরা লিখিত ভাবে জানিয়ে দেব।” কিন্তু কী উত্তর তাঁরা দেবেন, এ প্রশ্নে রবিউলবাবুর দাবি, নতুন দরপত্রে যে সংস্থা সর্বনিম্ন দর হেঁকেছে, তার চেয়ে অনেক কম টাকায় পুরনো সংস্থাটি যথেষ্ট ভাল রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছে। তা হলে নতুন দরপত্রটি বাতিল করা হল না কেন? এর কোনও উত্তর রবিউলবাবু দিতে চাননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.