ফের দাবি বাসভাড়া বাড়ানোর, মদন কিন্তু এড়ালেন
জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফের ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুললেন বাস মালিকেরা। সেই সঙ্গে ফের বিতর্কের সামনে এসে দাঁড়াল সরকারের ভাড়া না-বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। শনিবার মহাকরণে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে বৈঠকে বাস মালিকেরা জানিয়ে দেন, সরকার ভাড়াবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না-করলে বাস চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। পরিবহণ মন্ত্রী তাঁদের জানিয়েছেন, ভাড়াবৃদ্ধি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি নন।
মালিকদের দাবি মেনে অক্টোবরে বাসভাড়া পুনর্বিন্যাস করে পরিবহণ দফতর। সরকারের ঘোষণা মেনেও নিয়েছিলেন বাস মালিকদের একাংশ। কিন্তু পরে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তা বাতিল করে প্রতি ধাপে ১ টাকা করে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ধর্মঘটের মতো কড়া পদক্ষেপ করেননি মালিকেরা। কিন্তু চার মাসের মধ্যেই ফের তাঁরা ভাড়াবৃদ্ধির দাবি তুললেন।
এ দিন পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধন দাস ও তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মিনিবাস কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রতিনিধিরা জানান, ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, কয়েক মাসে ডিজেল-মোবিলের দাম বেড়েছে। খরচ বেড়েছে বিমার কিস্তি, টায়ারেরও। খুচরো পয়সা সংগ্রহ করতেও বাড়তি খরচ হচ্ছে। এ সবের ফলে ভাড়া না-বাড়ালে তাঁদের পক্ষে বাস চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। মন্ত্রীকে তপনবাবুরা জানিয়েছেন, আর্থিক সঙ্কটের জেরে এর মধ্যেই বিভিন্ন রুটে প্রায় ৩০% বাস বসে গিয়েছে। ভবিষ্যতে বাস আরও কমবে। পুলিশের হয়রানির অভিযোগও ফের তুলেছেন বাস মালিকেরা।
জ্বালানির দাম বাড়ায় সরকারি বাস চালাতে রাজ্যের খরচও যে অনেকটা বেড়েছে, তা স্বীকার করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি জানান, কলকাতা এবং শহরতলি-সহ জেলায়-জেলায় যানবাহন ব্যবস্থার উন্নতি চায় তাঁর দফতর। বিভিন্ন রুটে আরও বেশি বাস ও জেলায় আরও ট্রেকার চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রায় ৫০০ বাসকে নতুন পারমিট দেওয়া হয়েছে।
পরিবহণ মন্ত্রীর দাবি, “১৯ বছর ধরে পারমিট দেওয়া হচ্ছিল না। বিভিন্ন জনপ্রিয়, ভাল রুটও বন্ধ করে দেওয়া হয়।” বাস মালিকদের একাংশের বক্তব্য, যাঁদের কাছে পারমিট রয়েছে, মূল্যবৃদ্ধি আর ভাড়া না-বাড়ার ‘সাঁড়াশি’ চাপে তাঁরাই বাস চালাতে পারছেন না। নতুন পারমিট পাওয়া বাস মালিকেরা কত দিন বাস চালাতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
মদনবাবু জানান, কলকাতায় কয়েক বছরের মধ্যে প্রচুর সরকারি বাসের রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন পরিবহণ নিগম ওই সবের মধ্যে ১০-১২টি রুট ভাগাভাগি করে বাস চালাতে পারে। প্রতি সপ্তাহে দু’টি করে রুট চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। তা লাভজনক হবে কি না, পরে খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রী জানান, কাল, সোমবার থেকে বেহালায় ১৪ নম্বর রুটের বাস পরিষেবা আরও ভাল করে শুরু হবে। বাসস্ট্যান্ডে থাকবেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর্থিক সঙ্কটে বর্তমানে রাজ্যের পরিবহণ নিগমগুলি ধুঁকছে। এই পরিস্থিতিতে নিগমগুলির উপর নতুন রুটে বাস চালানোর দায়িত্ব, সঙ্কটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন মহলের। পরিবহণ মন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, “জনপ্রিয় ওই রুটগুলো বন্ধ হওয়াতেই নিগমগুলি আর্থিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফের তা চালু হলে তাদের লাভই হবে।” উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সিপিএম ওই রুটগুলি বন্ধ করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। মদনবাবু আরও জানান, কর্পোরেট সংস্থাকে দিয়ে বাস চালানোর সিদ্ধান্তও সোমবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। জোকার একটি বেসরকারি সংস্থা ওই দিন থেকেই দক্ষিণেশ্বর-আমতলা রুটে চারটি বাস চালাবে। সরকার নির্ধারিত ভাড়াই থাকবে সেগুলিতে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.